রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের সুরক্ষা ব্যুহ পরীক্ষা সম্পন্ন

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর কম্পার্টমেন্টের কন্টেইনমেন্টের (সুরক্ষা ব্যুহ) অভেদ্যতা ও দৃঢ়তার পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। পরীক্ষায় নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের সর্বোচ্চ নিরাপত্তামান নিশ্চিত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
রুশ রাষ্ট্রায়ত্ত পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (রোসাটম) সূত্র জানায়, পরীক্ষাকালে নকশা অনুযায়ী কন্টেইনমেন্টের অভ্যন্তরীণ চাপ বৃদ্ধি করা হয় এবং এর জন্য ব্যবহৃত হয় একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কম্প্রেসার। এ সময় এই অবকাঠামোটির দৃঢ়তা ও অভেদ্যতা পরীক্ষা করা হয়। এর লক্ষ্য হলো কোনো অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কন্টেইনমেন্টের ভেতরে চাপ বৃদ্ধি পেলে তা কতটুকু সহ্য করতে সক্ষম। পরমাণু জ্বালানি লোডিংয়ের আগে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। কারণ কোনো কাল্পনিক বিপর্যয় ঘটলে কন্টেইনমেন্টই হচ্ছে শেষ সুরক্ষা ব্যুহ।
সূত্র জানায়, কন্টেইনমেন্ট মূলত একটি অতি সুদৃঢ় কাঠামো যা নির্মাণে ব্যবহৃত হয় প্রিস্ট্রেসড রিইনফোর্সড কংক্রিট এবং এর ভেতরের দেয়ালে থাকে একটি শক্ত ইস্পাতের আবরণ। এটির নকশা এমনভাবে করা হয় যাতে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে তেজস্ক্রিয় পদার্থ রিয়্যাক্টর কমপার্টমেন্টের বাইরে বের হতে না পারে। সব তেজস্ক্রিয় পদার্থ এই কন্টেইনমেন্টের ভেতরেই আবদ্ধ ও সুরক্ষিত অবস্থায় থাকতে পারে। বাহ্যিক বড় কোনো আঘাত ও বিপর্যয় রোধ করতে সক্ষম এই কন্টেইনমেন্ট বা সুরক্ষা ব্যুহ।
সূত্র আরও জানায়, রূপপুর প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে শিগগিরই কিছু ‘হট মিডিয়া টেস্ট’ চালানো হবে, উদাহরণ স্বরূপ কুল্যান্ট সার্কিটকে নকশা অনুযায়ী নির্ধারিত তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা এবং বাষ্প উৎপাদন। অন্যান্য নিরাপত্তা প্যারামিটার চূড়ান্তভাবে পরীক্ষা করা হবে, যেমন সক্রিয় অবস্থায় বাষ্প নির্গমনকারী ডিভাইসের নিরাপত্তা। এই পরীক্ষার সময় বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দ তৈরি হবে যা সম্পূর্ণ পূর্ব নির্ধারিত। এ নিয়ে স্থানীয় জনসাধারণের আতংকিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। রসাটম নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে, তাই সংস্থাটির মূল লক্ষ্য হলো সব নিরাপত্তা চাহিদা পূরণ।
রাশিয়ার আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুটি ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ চুল্লি স্থাপিত হয়েছে। প্রতিটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রসাটমের প্রকৌশল বিভাগ জেনারেল কন্ট্রাকটর হিসেবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।