ড. ইউনূসের গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের ঘেরে ডাকাতি, আহত ৪
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান ‘গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন’-এর ৩০০ একর বিশিষ্ট চিংড়ি ঘেরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় চারজন ঘের কর্মচারী আহত হয়েছেন। আজ বুধবার (১১ জুন) ভোরে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিংড়ি জোনের রামপুর মৌজায় এই ঘটনা ঘটে।
গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের খামার ব্যবস্থাপক উৎপল কান্তি চৌধুরী এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিদিনের মতো খামারের কর্মচারীরা ঘের থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরণ করে খামারের অফিসে সংরক্ষণ করে। বুধবার ভোর রাতে অস্ত্রধারী সাত থেকে আটজন ডাকাত আমাদের খামার অফিস এলাকায় ঢুকে পড়ে। তাদের প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ও কিরিচ ছিল।
উৎপল কান্তি চৌধুরী বলেন, ডাকাতেরা খামার অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিম্মি করে বিক্রির জন্য প্যাকেট করা বাগদা, কোরাল, বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ঘের কর্মচারীর দুটি মোবাইল ও ছয়টি টর্চ লাইটও লুট করে নিয়ে যায়। বিষয়টি চকরিয়া থানার ওসিকে অবহিত করা হয়েছে। খামার থেকে যখন ডাকাতদল মাছ লুট করছিল, তখন খামারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাধা দিলে তাদের মারধর করা হয়।
ব্যবস্থাপক উৎপল কান্তি চৌধুরী আরও বলেন, ডাকাতদলের মারধরে খামার মসজিদের ইমাম মোজাম্মেল হক (৪০), কর্মচারী নাসির উদ্দিন (৫৫), মোজাম্মেল (৫৭) ও মিজান (৩৫) আহত হয়েছেন। তবে তাদের হাসপাতালে নেওয়ার মতো জখম হয়নি। খামারে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য থাকা ওষুধ খেয়েছেন। চকরিয়া থানা থেকে পুলিশ এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গেছে।
এর আগে ২০২১ সালের ৫ জুলাই ও ২০২৪ সালের ৩ জুন দুই দফা ঘেরটি দখলে নিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। অভিযোগ রয়েছে, চকরিয়া-পেকুয়া আসনের সাবেক এমপি জাফর আলমের লোকজন ওই সময় চিংড়ি ঘেরটি দখলে নিয়েছিল।
উৎপল কান্তি জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সন্ত্রাসীরা ঘের ছেড়ে পালিয়ে গেলে গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ আবার দখল নিয়ে মাছ চাষ শুরু করে। এ ঘটনায় ২০২১ সালে চকরিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়েছিল, সেটি চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, খামার ব্যবস্থাপকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।