বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও ডাকসুর ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন হয়েছে। জনগণ শহীদ হয়েছে। রক্ত দিয়েছে। তারা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলেছে। হাজার হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা এলাকায় বরিশুর আঞ্চলিক উচ্চ মধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন আমান উল্লাহ আমান।

আমান উল্লাহ আমান বলেন, আজকের যে আয়নাঘর—তা প্রমাণ করে শেখ হাসিনার সরকার ফ্যাসিস্ট, নির্যাতনকারী, নিপীড়নকারী, অত্যাচারী, লুটপাটকারীসহ বিভিন্ন অপকর্মের সরকার ছিল। শেখ হাসিনা মনে করেছিল নির্যাতন করে জনগণের মুখ বন্ধ করা যাবে, কিন্তু তা করতে পারেনি। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার জনগণের মুখ বন্ধ করার জন্য লেলিয়ে দিয়েছিল পেটুয়া বাহিনী। তার পরও তাদের শেষ রক্ষা হয়নি। পালিয়ে যেতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। শেখ হাসিনার নির্দেশেই সব ধরনের অন্যায়, অপকর্ম, জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়নসহ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

আমান উল্লাহ আমান আরও বলেন, আয়নাঘরে কীভাবে টর্চার সেল বানিয়ে নির্যাতন নিপীড়ন করা হয়েছে তা জনগণ আজ দেখতে পাচ্ছে। টর্চার সেলে কীভাবে জনগণের উপর নির্যাতন করা হয়েছে তা দেখে সাধারণ মানুষের গা শিউরে উঠে। ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সুমনসহ বিএনপির হাজারো নেতাকর্মীকে গুম করে হত্যা করা হয়েছে। 

১৬ বছরে আওয়ামী সরকার সাধারণ মানুষের উপর যে হামলা, মামলা, নির্যাতন ও জুলুম করেছিল তার প্রমাণ আজ জনগণ আয়নাঘরের মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছে উল্লেখ করে আমান উল্লাহ আমান বলেন, আওয়ামী সরকার শুধু সাধারণ মানুষের উপর নিপীড়ন চালিয়ে ও হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি, তারা সাংবাদিকদের মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছিল।

সাংবাদিক সাগর-রনির হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি উল্লেখ করে আমান উল্লাহ আমান বলেন, আর এসব অপকর্মের মূলে ছিলেন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত সিরাজ শিকদারসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল তখনকার আওয়ামী লীগ সরকার। ওই সময় ৪৫ হাজার বামপন্থী নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। 

শেখ মুজিব হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হননি, বাকশালী শাসন কায়েম করেছিলেন।

বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও শিক্ষানুরাগী মোহাম্মদ মোক্তার হোসেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল হক, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসমত উল্লাহ নবী, বিএনপিনেতা মো. লিটন প্রমুখ ।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন বরিশুর আঞ্চলিক উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন খান। অনুষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতির অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে। 

অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি আমান উল্লাহ আমান বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সাবেক ছাত্র-ছাত্রীসহ এলাকার গণ্যমান্য প্রবীণ ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।