গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার ঘটনায় দাউদ পাটোয়ারী (৩১) নামের এক ব্যক্তিকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

আজ শুক্রবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির দাউদকে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম খুরশীদ আলম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই (উপপরিদর্শক) রনপ কুমার ভক্ত এ বিষয়ে এনটিভি অনলাইনকে জানান, গত ২ আগস্ট দাউদকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠান ঢাকার মহানগর হাকিম নুরুন্নাহার ইয়াসমিন। তবে আদালতে তিনি কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি।

দাউদ মিরপুর এলাকার আরিফাবাদ হাউজিংয়ের তত্ত্বাবধায়ক। তাঁর বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার নরোত্তমপুর গ্রামে।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছিল, গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের অংশ হিসেবে হামলাকারীদের ঢাকার অবস্থান শনাক্ত করা হচ্ছিল।

প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, হামলাকারীদের কেউ আরিফাবাদ হাউজিংয়ের উল্লিখিত বাসায় থেকে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন। এই আসামি ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক। তিনি ইসমাইল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে বাসা ভাড়া দিয়েছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তি জঙ্গিসংশ্লিষ্ট কেউ একজন। ওই ব্যক্তির কোনো স্থায়ী ঠিকানা এই তত্ত্বাবধায়ক রাখেননি। এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার গুলশানের হামলায় অন্যতম সন্দেহভাজন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষক হাসনাত করিম ও কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাহমিদ হাসিব খানকে আটদিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

এজাহার থেকে জানা যায়, ১ জুলাই রাত ৯টার দিকে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। হামলার পর রাতেই তারা দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করে। পরের দিন কমান্ডো অভিযানে ছয় সন্দেহভাজন অস্ত্রধারী নিহত হয়।

ওই অভিযানের আগেই ঘটনাস্থলের কাছ থেকে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে আটক করে। সন্দেহভাজন হওয়ায় তাঁকে পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে এ হামলার ঘটনায় ২৯ জন নিহত হয়েছে। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে। সংগঠনটির মুখপাত্র আমাক হামলাকারীদের ছবি প্রকাশ করে বলে জানায় জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স।

এ ঘটনায় এক ভারতীয় নাগরিকসহ নয় ব্যক্তি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে বিভিন্ন সময়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারা অনুযায়ী সাক্ষ্য দিয়েছেন।