খুলনায় চিকিৎসকদের ধর্মঘট, দুর্ভোগ

খুলনার সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলছে। তবে শুধু মুমূর্ষু রোগীদের জন্য ধর্মঘট শিথিল করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য সব ধরনের চিকিৎসাসেবা বন্ধ রয়েছে।
গত সোমবার তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে আবদুল্লা হেল মামুন নামের এক চিকিৎসককে ঘুষি মারার প্রতিবাদে একদিনের এ ধর্মঘটের ডাক দেয় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের খুলনা শাখা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, চিকিৎসকদের ধর্মঘটের কারণে ভীষণ উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন রোগীরা। হাসপাতালটিতে জরুরি বিভাগ ছাড়া কোথাও চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন না ডাক্তাররা। ‘চিকিৎসকদের ধর্মঘট’ লেখা একটি কাগজ টানিয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালে।
একই রকমের দৃশ্য দেখা গেছে খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ নগরীর বিভিন্ন ক্নিনিকে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) খুলনার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলম জানান, তেরখাদায় ডাক্তার মামুনকে মারধরের ঘটনায় স্থানীয় চেয়ারম্যান এফ এম অহিদুজ্জামান নাম উল্লেখ করে মামলা করার পরও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। এর প্রতিবাদে তাঁদের এই ধর্মঘট বলে জানান তিনি।
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান খান জানান, চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে। তবে তিনি পলাতক রয়েছেন।
এদিকে পুলিশ খুঁজে না পেলেও আজ স্থানীয় পত্রিকায় ছবিসহ বিজ্ঞাপন দিয়ে এফ এম অহিদুজ্জামান দ্বিতীয়বারের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিজ্ঞাপনে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২ মার্চ রিটার্নিং অফিসার মো. সাইফুর রহমান তেরখাদা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে এফ এম অহিদুজ্জামানকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যথাযথভাবে নির্বাচিত হয়েছেন বলে ফরম ‘ঙ’ বিধি ২১ অনুযায়ী লিখিতভাবে ঘোষণা দিয়েছেন।
গতকাল বুধবার খুলনা বিএমএর পক্ষ থেকে ঘটনার বিবরণ উল্লেখ করে জানানো হয়, গত সোমবার রাতে তেরখাদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্মরত থাকাকালে ডা. আবদুল্লা হেল মামুনকে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ অহিদুজ্জামান তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাঁর বাসায় যেতে বলেন। চিকিৎসক জরুরি বিভাগ ফেলে না গিয়ে একজন নার্সকে সেখানে পাঠান। এ ঘটনায় সোমবার রাত ৮টার দিকে অহিদুজ্জামান লোকজন নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে ডা. আবদুল্লা হেল মামুনকে মারধর করেন এবং ঘুষি মেরে তিনটি দাঁত ভেঙে ফেলেন। এ ঘটনায় ডা. আবদুল্লা বাদী হয়ে অহিদুজ্জামান, তাঁর ভাইসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।