পাঠ্যপুস্তকে ভাষা শহীদদের জীবনীর দাবি

ভাষা শহীদদের জীবনী পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন শহীদ আবদুল জব্বারের ছেলে নুরুল ইসলাম বাদল। শুক্রবার এনটিভির কাছে এ দাবির কথা জানান তিনি।
বাদল বলেন, ‘আমার মায়ের শেষ ইচ্ছে ছিল এ দাবি। কিন্তু তিনি আজ বেঁচে নেই। আমিও একদিন থাকব না। আমি আশা করছি, আমার জীবদ্দশায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ দাবি বাস্তবায়ন করবেন।’ তিনি বলেন, ‘ভাষাশহীদদের পাঁচ পরিবারের পক্ষ থেকে আমার আকুল আবেদন সাত বীরশ্রেষ্ঠের মতো পাঁচ ভাষা শহীদের জীবনীও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। মৃত্যুর আগে পাঠ্যপুস্তকে ভাষাশহীদদের জীবনী দেখে যেতে চাই।’
ভাষাশহীদ জব্বারের ছেলে বলেছেন, ভাষার জন্য যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে আজকের শিক্ষার্থী ও নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা তেমন কিছুই জানে না। পাঠ্যপুস্তকে ভাষা শহীদদের পূর্ণাঙ্গ জীবনী না থাকায় নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষা দিবস বা ভাষাশহীদদের সম্পর্কে এখনো অন্ধকারে রয়েছে। তিনি ময়মনসিংহ, গফরগাঁও ও হালুয়াঘাটে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের নামে প্রতিষ্ঠিত স্থাপনাগুলো সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন।
নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। কাজেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে ভাষাশহীদদের ‘একুশে পদক’, ‘বাংলা একাডেমি পুরস্কার’ ও ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
ভাষাশহীদ আবদুল জব্বারের বাড়ি ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাঁচুয়া গ্রামে। ২০০৮ সালে ওই গ্রামটি ভাষাশহীদ আবদুল জব্বার নামে নামকরণ করা হয়েছে ‘জব্বারনগর’। ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর ছাড়াও শহীদ মিনার, ভাষাশহীদ আবদুল জব্বার উচ্চ বিদ্যালয়, ভাষাশহীদ জব্বার তোরণ নির্মাণ, গফরগাঁও পৌরসভার পাবলিক হল মোড়ে ভাষাশহীদ আবদুল জব্বার চত্বর, গফরগাঁও-ভালুকা সড়কের ভারইলবাজার থেকে জব্বারনগর পর্যন্ত ভাষাশহীদ আবদুল জব্বার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
বাদল আরো বলেন, গ্রন্থাগারটি নিভৃতপল্লীতে অবস্থিত। সেখানে যদি ভাষা আন্দোলন, ভাষাশহীদ, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাবিষয়ক বই না থাকে তবে পাঠক আসবে কিসের টানে। তা ছাড়া যাঁরা বই পড়েন তাঁরা প্রতিদিন পাঠাগারে আসেন না। যদি তিন/চারটি দৈনিক পত্রিকা রাখা যেত তবে প্রতিদিনই মানুষ পাঠাগারে আসত।
এদিকে ভাষাশহীদ আবদুল জব্বারের পারিবারিক উদ্যোগে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী শিমুলকুচি গ্রামে ধানক্ষেতে শহীদ মিনার নির্মাণ করে একটি খুপরিতে ভাষাশহীদ জব্বার ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।