কুষ্টিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে সহযোগিতা পাবেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, ৩০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এর মধ্যে একটি হবে দেশের পশ্চিমাঞ্চল কুষ্টিয়ায়। এখানে ভারতের বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারেন, যা তাদের জন্য লাভজনক হবে। সরকার দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
আজ রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
বৈঠকের ব্যাপারে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত আমাদের বৃহত্তম প্রতিবেশী রাষ্ট্র। দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত মজবুত। তিনি (হর্ষবর্ধন শ্রিংলা) বাংলাদেশে নতুন এসেছেন। আজকে আমরা দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করেছি।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ আছে। অনেক দেশের ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমরা চাই ভারতের ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুক।’ বিনিয়োগের ব্যাপারে ভারতের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সহযোগিতা করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাণিজ্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে দূর করে বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধি করা হবে। বর্ডার হাট বাংলাদেশ এবং ভারতের মানুষের মধ্যে বেশ আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। উভয় দেশের মানুষ আরো বর্ডার হাট চাচ্ছেন। উভয় দেশের সরকার বর্ডার হাটের সংখ্যা ও পরিধি বৃদ্ধির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চলমান বাণিজ্য সমস্যাগুলো সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।’
এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, হাইকমিশনার শ্রিংলা কাঁচা পাট ভারতে রপ্তানির বিষয়ে সমস্যা সমাধানে বাণিজ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘ভারতের অনেক শিল্প কারখানা বাংলাদেশের কাঁচা পাটের ওপর নির্ভরশীল, তাই দ্রুত সমস্যাটির সমাধান হওয়া প্রয়োজন।’ এর পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি করেছে পাঁচ হাজার ৮১১ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। একই সময়ে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে ৫২৭ দশমিক ১৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে পাঁচ হাজার ২৮৪ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভারতের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। ২০১৩-২০১৪ সালের তুলনায় গত বছর বাণিজ্য ঘাটতি কমে এসেছে। চলমান বাণিজ্য বাধাগুলো দূর করা গেলে ভারতে বাংলাদেশের পণ্যের রপ্তানি আরো বাড়বে।’
বৈঠকের সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) মনোজ কুমার রায় এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের ডেপুটি হাইকমিশনার আদর্শ সোয়াইকা উপস্থিত ছিলেন।