অবশেষে কাদের মোল্লার কবরের ‘শহীদ’ ঢাকা হলো কালিতে

মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবদুল কাদের মোল্লার কবরের নামফলকে ব্যবহৃত ‘শহীদ’ শব্দটি কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে তার বাড়ি যাওয়ার পথে তিন রাস্তার মোড়ে ‘শহীদ কাদের মোল্লার কবর এই দিকে’ লাগানো নির্দেশনাটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে।
২০১৩ সালে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর হয়। এরপর তার কবরের নামফলকে শহীদ শব্দটি লেখা নিয়ে ফুঁসে উঠেছিল ফরিদপুরের মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ।
এরপরই কবরের নামফলকে শহীদ শব্দটি কালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়, ভেঙে ফেলা হয় কবরের স্থান নির্দেশকারী বোর্ডটিও। প্রায় চার-পাঁচ মাস আগে তার পরিবারের পক্ষ থেকেই এ কাজ করা হয় বলে জানা গেছে।
আবদুল কাদের মোল্লার ছোট ভাই ও ভাসানচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘কবরে যে নামফলক তা জামায়াতের পক্ষ থেকে লাগানো হয়েছিল।’
১৯৭১ হত্যা, খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে আবদুল কাদের মোল্লাকে।
এ রকম একজন যুদ্ধাপরাধীর কবরের নামফলকে শহীদ পদবি ব্যবহার করায় চরম ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন তখন জেলার মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ। অবিলম্বে ওই নামফলক ভেঙে ফেলার দাবি জানান তাঁরা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল ফয়েজ শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘কাদের মোল্লার মতো জঘন্য যুদ্ধাপরাধী, খুনির কবরে এমন নামফলক কোনোভাবেই লিখতে পারে না কেউ। দেশের একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ায় অপরাধী প্রমাণিত হওয়ায় আইন অনুযায়ী এই রাজাকারের শাস্তি হয়েছে। যারা কাদের মোল্লার কবরে শহীদ নামফলক ব্যবহার করেছিল তারাও রাষ্ট্রদ্রোহী। তাদেরও বিচার হতে হবে বাংলার মাটিতে।’
তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়ে এ মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ‘সেদিন নৃশংসভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়েছে। আজ এই স্বাধীন বাংলাদেশে একজন রাজাকারের কবরের নামফলকে শহীদ লেখা হয়েছিল এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।’
সদরপুর উপজেলা কমান্ডার আবদুল গাফফার বলেন, ‘এটা যে কত বড় দুঃখজনক ব্যাপার, তা বলে শেষ করা যাবে না একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। তিনি কী ছিলেন যে শহীদ লিখবেন তাঁর কবরে, এটা চরম নিন্দার বিষয় ছাড়া আর কিছুই নয়।’
সদরপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রোখসানা রহমান জানান, কবরে এটা তারা কোনোভাবেই লিখতে পারেন না।