স্ত্রীর চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা, স্বামী আটক

ময়মনসিংহের ভালুকায় স্ত্রীকে নির্যাতন করার একপর্যায়ে চোখ তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন স্বামী। ডান চোখে আঘাত নিয়ে এখন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন জিন্নাত ফাতেমা রুনা (২৩)। গতকাল রোববার রাতে ভালুকা উপজেলার গাদুমিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
রুনার স্বামী বুলবুল আহম্মেদ রাজুকে (৩৫) পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন রাজুর বাবা ইয়াকুব আলী।
ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ জানিয়েছেন, চার বছর আগে একই উপজেলার রান্দিয়া গ্রামের বাসিন্দা রুনার সঙ্গে রাজুর বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিন বছর বয়সী একটি ছেলেও আছে, যার নাম রামিদ আহমেদ (৩)। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য স্বামীসহ পরিবারের কয়েকজন ব্যক্তি রুনার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছে।
ওসি মামুনুর আরো জানান, গত রোববার রাত সাড়ে ৯টায় রাজু স্ত্রী রুনাকে তাঁর বাবার বাড়ি থেকে এক লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। এ সময় স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রুনাকে মারধর করেন রাজু। একপর্যায়ে কাটা চামিচ দিয়ে রুনার ডান চোখে আঘাত করেন রাজু। বিষয়টি জানতে পেরে দ্রুত ওই বাড়িতে আসেন রাজুর বাবা ইয়াকুব আলী। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় রুনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাতে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে আজ সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ নার্স লায়লা আরজুমান্দ বানু এনটিভিকে বলেন, ‘ডান চোখে আঘাত নিয়ে রুনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।’ হাসপাতালে রুনার যথাযথ চিকিৎসা চলছে বলেও তিনি জানান।
রুনার শ্বশুর ইয়াকুব আলী এনটিভিকে বলেন, ‘সে (রাজু) অত্যাচার করে। এগুলো আমাদের কাছে অসহ্য লাগে। বাধ্য হয়ে আমি ওকে আইনের হাতে তুলে দিয়েছি। এখন আইন যা করার করবে।’
ইয়াকুব আরো বলেন, ‘বাড়ি তো আমার দুইটা। আমি রাত ৯টার দিকে খবর পাই সে (রাজু) বউকে মারধর করছে। এসে দেখি বউকে মারধর করে দরজা বাইরে থেকে লাগিয়ে দিয়েছে।’
এ ঘটনায় ভালুকা মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে রুনার স্বামী বুলবুল আহম্মেদ রাজু, ননদ ফালানী আকতার, চাচা শশুর সবুর মিয়া এবং আ. ছাত্তার নামে আরো একজনকে।
রুনার ভাই ইব্রাহিম খলিল বাদী হয়ে রোববার রাতেই রাজুসহ চারজনকে আসামি করে ভালুকা মডেল থানায় মামলা (নম্বর-৩৬) দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভালুকা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান, রুনার চোখ উৎপাটন চেষ্টা ও নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের করার পর রোববার রাতেই বুলবুল আহম্মেদ রাজুকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে সোমবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করার অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন এসআই আজাদ।