‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতেই ধরপাকড়’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু এবং নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ করতে দেশব্যাপী ধরপাকড় চলছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, দেশব্যাপী এই গ্রেপ্তার অভিযান শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএফআরএফ) আয়োজিত সংলাপে এসব কথা বলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
সংলাপে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে আর পুলিশ তাদেরই গ্রেপ্তার করছে বলে জানান খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সচিবালয়ের গণমাধ্যমকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, স্থানীয় সরকার সচিব আবদুল মালেক এবং সমবায় বিভাগের সচিব এম এ কাদের উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএফআরএফ সভাপতি শ্যামল সরকার।
সংলাপে কয়েকজন সাংবাদিক প্রশ্ন করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গণতন্ত্রকে তৃণমূল পর্যায়ে নেওয়ার জন্য দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে সংসদের বাইরে থাকা বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে দেশব্যাপী ব্যাপক অভিযান চলছে। এ অভিযান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে কি না এবং এটি বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার কৌশল কি না?
ওই সব প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সরকারের। পাশাপাশি নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করাও সরকারের দায়িত্ব। যারা এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে ব্যাহত করতে চায় এবং যারা সন্ত্রাস করেছে, বিভিন্ন মামলার আসামি তাদেরই পুলিশ ধরছে। এদের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে।’
কিছুদিন আগে চারটি পৌরসভার নির্বাচিত চারজন মেয়রকে বরখাস্ত করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট কারণেই তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে।’
সংসদ সদস্যদের বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে স্থানীয় সরকার উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সে ক্ষেত্রে তৃণমূলের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে পারবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সংসদ সদস্যরা যেন স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাজে ব্যাঘাত না ঘটান এবং হস্তক্ষেপ না করেন, সে জন্যই তাদের পাঁচ কোটি টাকা করে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে তাঁরা নিজেরাই প্রজেক্ট তৈরি করেন এবং নিজেরাই তা বাস্তবায়ন করেন।’
স্থানীয় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের এতই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যে এই বিষয়টি নিয়ে সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীকে পড়তে হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
২৮ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বেতন বিলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সেখানে কাউন্টার সাইনের (স্বাক্ষর) ব্যবস্থা আছে। তার মানে এটা নয় যে তারা ইউএনওর (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) অধীনে চলে গেলেন। যেমন আমার বেতনেও সই করেন একজন হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা। তার মানে এই নয় যে, আমি তাঁর অধীনে চলে গেলাম।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অর্থ সংকটের কারণে তাঁরা উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারছেন না। এর কারণ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে যে প্রশাসকরা ছিলেন, তাঁরা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করে গেছেন। এই অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের জন্য তাঁদের শাস্তি ভোগ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে এখন তদন্ত চলছে।’