টুকটাক সহিংসতা হয়েছে, তবে ভোটকেন্দ্র নির্বিঘ্ন থাকবে

রাত পোহালেই ভোট। এরই মধ্যে গতকাল ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার-পর্ব শেষ হয়ে গেছে। কাল শনিবার দেশের প্রায় সাড়ে ১০ কোটি ভোটার আগামী পাঁচ বছরের জন্য কোনো দল বা জোটকে ক্ষমতায় বসাবে।
জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি প্রায় এক দশক পর অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাঁর মিত্রদের তেমন কোনো অভিযোগ না থাকলেও হামলা-মামলা-পুলিশি হয়রানির অভিযোগ শুরু থেকেই ছিল বিএনপির।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সারা দেশে প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। তাদের সঙ্গে রয়েছেন বিচারিক ও নির্বাহী হাকিমরাও।
এ সবকিছু নিয়ে গতকাল শুক্রবার এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম।
এনটিভি অনলাইন : একদিন বাদে ভোট। কেমন হবে বলে মনে করছেন?
মো. রফিকুল ইসলাম : কমিশন শপথ নিয়ে এসেছে সংবিধান রক্ষার। নির্বাচন সংবিধানিকভাবে হবে। আমরা আশা করছি, দলমত নির্বিশেষে সবাই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে। আমরা কোনো সহিংসতা চাই না। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই। টুকটাক কিছু সহিংসতা হচ্ছে তবে ভোটের দিন ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ কঠোর থাকবে।
এনটিভি অনলাইন : বিরোধীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ এসেছে, ক্ষমতাসীন দল ও তাদের মিত্ররা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে না যেতে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
মো. রফিকুল ইসলাম : এটা খুব দুঃখজনক। সমস্যা হলো আমাদের কাছে কেউ অভিযোগ না করলে বা জানতে না পারলে তো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি না। মির্জা আব্বাসের মতো নেতা যদি পুলিশের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিতে ভয় পায়, তবে সাধারণ মানুষ অভিযোগ জানাবে কীভাবে? তবে যদি কোনো পুলিশ কর্মকর্তা কিংবা আওয়ামী লীগের নেতারা এভাবে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে থাকে তবে তাঁরা ঠিক করছেন না। এটা গণতন্ত্রের জন্য বাধা। সব শেষে ভোটাররা যেন ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এনটিভি অনলাইন : অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ভোটে কারচুপি হবে। পরিস্থিতি যদি সেদিকেই যায় কারচুপি রুখতে পারবে ইসি?
মো. রফিকুল ইসলাম : ভোট সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ইসির পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে পরিস্থিতি বাজে হলে সেখানে পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে যা যা করা দরকার সব ব্যবস্থাই করবে কমিশন।
এনটিভি অনলাইন : লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিয়ে অনেক কথা হয়েছে, তা তো হয়নি। কী বলবেন।
মো. রফিকুল ইসলাম : কোথাও কোথাও টুকটাক হামলার ঘটনা আমরা শুনেছি। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থাও আমরা নিয়েছি। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া অনেক স্থানেই আমরা পরিস্থিতির খুব অবনতি দেখিনি। আর সাধারণত সংসদ নির্বাচনে একটু ঝামেলা তো হয়ই। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যে খুব ভালো সেটিও বলা যাবে না।
এনটিভি অনলাইন : সারা দেশে ১২২টি নির্বাচনী তদন্ত কমিটি করেছিল ইসি। গণমাধ্যমেও সহিংসতার কথা এসেছে। তদন্ত কমিটির সর্বশেষ অবস্থা কী?
মো. রফিকুল ইসলাম : কিছু ঘটনার প্রমাণ তো পেয়েছে। যে ঘটনাগুলোর প্রমাণ পেয়েছে সেখানে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। মামলা করার কথাও বলেছি। যেখানে পাইনি সেখানে তো আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারি না।
এনটিভি অনলাইন : ভোটের মুখে ভোটারদের জন্য কোনো বক্তব্য?
মো. রফিকুল ইসলাম : আমরা চাই সবাই ভোটকেন্দ্রে যাবে। ভোট দেওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকবে বলে কমিশন মনে করছে। কমিশনের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই, আপনারা কেন্দ্রে যান, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিন। আপনার ভোট আপনি দিন। যেকোনো ধরনের সংঘাতের শঙ্কা দেখলেই নির্বাচনী কর্মকর্তাদের জানান। কেন্দ্রে কেন্দ্রে পুলিশ থাকবে তাদের জানান।