ইউপি সদস্যের মারধরের শিকার কিশোরীর আত্মহত্যা!

নেত্রকোনা সদরে এক ইউপি সদস্যের মারধরের শিকার হয়ে কিশোরী (১৫) লজ্জায় আত্মহত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
কিশোরী হাফসানা আক্তার মৌগাতী ইউনিয়নের নাটেরকোনা গ্রামের কৃষক জয়নাল মিয়ার মেয়ে।
এ ঘটনায় সদর উপজেলার মৌগাতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল হামিদ ডেন্ডুর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার মামলা করেছেন ওই কিশোরীর মা।
পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
কিশোরীর বাবা জয়নাল মিয়ার ভাষ্য, গত ২৯ অক্টোবর দুপুরে মৌগাতী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল হামিদ ডেন্ডুর কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে তার মেয়ে হাফসানা,স্ত্রী মঞ্জুরা ও পুত্রবধূ পান্না মারধরের শিকার হন। তখনই এ লজ্জায় মেয়ে আত্মহত্যা করবে বলে সবার কাছে নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। পরে কিশোরী হাফসানা বিষ পান করে।
হাফসানার মা মঞ্জুরা বেগম বলেন, তাদের কাছ থেকে ইউপি সদস্য ডেন্ডু বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের আগমুহূর্তে নিজের প্রচারণার জন্য এক লাখ টাকা সুদে ধার নিয়েছিলেন। পরে দীর্ঘদিন চলে গেলেও আসল অথবা সুদ কোনোটাই ফেরত দিচ্ছিলো না। পাওনা টাকা চাওয়ার অপরাধে পরিবারের সব সদস্যদের দফায় দফায় মারপিট করেছেন ইউপি সদস্য ডেন্ডু। গত রোববারও টাকা চাইলে মা মেয়ে ও পুত্রবধূকে একত্রে মারধর করেন তিনি। বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি হাফসানা।
মঞ্জুরা বেগম বলেন, ‘ঘটনার আগে পরিবারের সদস্যদের কাছে হাফসানা বলে- ডেন্ডু আমাদের পাওনা টাকা না দিয়ে উল্টো আমাদেরকেই মারধর করে বারবার। পরিবারের সবাইকে পিটিয়েছে সে। আজ আমার সামনে আমার মাকেও পিটালো!এসবের কোনো বিচার পাইনা, এ জীবন রেখে তাহলে লাভ কি। এর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো। আমি বিষ খাব।’
নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা.ফখরুল হাসান টিপু জানান,হাফসানাকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা।
নেত্রকোনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই)আল আমিন ও এসআই মহসিন মোস্তফা হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমীর তৈমুর ইলী বলেন, ঘটনা জানতে পেরে হাসপাতাল ও ওই এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।
ওসি আরো বলেন, ইউপি সদস্য ডেন্ডুকে ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।