পশুর হাটে ‘পানি জীবিকা’

রাজধানীর গাবতলীর পশুর হাটে পুরোদমে কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে। এসব গরুকে হাটের মধ্যেই চালের গুঁড়া, ভুসি, ঘাসসহ অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি পানিও খাওয়াতে হচ্ছে। গরু ব্যবসায়ীরা গরুর জন্য সব খাবার সঙ্গে নিয়ে এলেও পানি নিয়ে আসেননি বা পানি আনা সম্ভবও নয়।
সে কারণে হাটের মধ্যে ছোট শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক নারীদের কলস ভর্তি পানি কাঁধে করে নিয়ে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
তেমনই একজন পারভীন আক্তার। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা পানি বেচি, এক কলসি পানি ১০ টাকা করে। সাড়া বছর তো আর হাট বসে না, তাই এই হাটে পানি বেইচ্যা টাকা কামাই। আমার মতো কত ম্যাইয়া হাটে এই কাম করতাছে। আমার মা আর মাইয়াও আছে। ওরা পানি আনতে গেছে পাম্প থ্যাইকা।’
এই হাটে কতজন এমন পানি বিক্রেতা নারী আছেন জানতে চাইলে পারভীন আক্তার জানান, প্রায় ১০০ জনের বেশি।
প্রতিদিন কত কলসি পানি বিক্রি হয়? জবাবে পারভীন জানান, সেটার কোনো হিসাব নাই। তবে প্রায় ৫০ কলসি পানি তিনি একলা বিক্রি করতে পারেন হাটে।
প্রায় ৫০ ঊর্ধ্ব এক নারীকে কলসে করে পানি আনতে দেখা যায়। কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তাঁর নাম আলেয়া বেগম। স্বামী রিকশা চালান। পাশেই বড়বাড়ি বস্তিতে তাঁরা থাকেন।
আলেয়া বেগম বলেন, প্রতি বছর কোরবানি ঈদের সময় এই হাটে তিনি কলসি দিয়ে পানি বিক্রি করেন। এতে তাঁর প্রতিদিন প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা উপার্জন হয়। প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি এই হাটে পানি বিক্রি করছেন।
এই কলসের পানি কোথা থেকে নিয়ে আসছেন? এই পানি কি গরুকে খাওয়ানোর জন্যই নাকি মানুষও খেতে পারে? আলেয়া বেগম বলেন, ‘এইডা তো বাজান ভালা পানিই। পাম্প থ্যাইকা লইয়া আসি। এই পানি মাইনসেও খাইতে পারে। তয় গরুর জন্যই কলসির পানি কিইন্না লয়।’