‘পরিস্থিতি ওনাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে’

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি রাজনীতিবিদদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ, রাজনৈতিক সংকট নিরসনসহ সাত দফা দাবিতে সুজন এ কর্মসূচির আয়োজন করে। সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘রাজনীতির ভাষা পরিবর্তন করতে হবে। কারণ সাধারণ মানুষ যারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়, আজকে তারাই সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমি মনে করি, আমাদের রাজনীতিবিদদের বুঝতে হবে, ক্রমেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি ওনাদের হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।... সেটা দেশের এবং রাজনীতিবিদদের জন্য ভালো নয়।’
সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার আশা প্রকাশ করেন, রাজনীতিতে শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তিনি বলেন, ‘এই ধরনের সন্ত্রাস পরিহার করে যেন রাজনীতি পরিচালিত হয়। সে জন্য সরকারের দায়দায়িত্ব খুব বেশি। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে যে রাজনৈতিক পদ্ধতিগুলো আছে, প্রতিপক্ষকে সেগুলো করতে দেওয়ার দাবি আমরা এখান থেকে জানাচ্ছি।’
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যারা এই উদ্যোগে অগ্রগামী হয়েছেন আমি তাঁদের সাথে সহমত প্রকাশ করছি। সংলাপের বিকল্প কোনো কিছু নেই। আমাদের দেশের ভেতরে যে উদ্যোগ, সেটা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে আমি মনে করি, আমাদের দেশের স্বার্বভৌমত্ব লঙ্ঘিত হবে এবং সেখানে আমরা বিদেশিদের হস্তক্ষেপটা বেশি দেখব।’
মানববন্ধন থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরেন সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। দাবিগুলো হলো-আন্দোলনের নামে সহিংসতা বন্ধ করা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধসহ রাজনৈতিক সংকট নিরসনে অবিলম্বে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করে জাতীয় সনদ প্রণয়ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা এবং রাজনৈতিক হয়রানি বন্ধ করে গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত করা।
এ সময় মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটা গণতান্ত্রিক দেশ বলা হচ্ছে। কিন্তু এখন রাজনীদিবিদরা যে ব্যবহার করছেন, সেটা কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবহার নয়। আমরা শান্তিতে থাকতে চাই। এসব বন্ধ দেখতে চাই।’
বক্তরা দেশব্যাপী যে নৈরাজ্য, সহিসংতা ও নাশকতা হচ্ছে, তা বন্ধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।
সুজনের এই মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে ব্রতী, নাগরিক উদ্যোগ, নারী প্রগতি সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন।