৪ আ.লীগ কর্মী হত্যার দায়ে ২৩ জনের ফাঁসি

দীর্ঘ ১৫ বছর পর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় চার আওয়ামী লীগ কর্মীকে হত্যার দায়ে ২৩ আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কামরুন নাহার এ মামলার রায় দেন।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমীন আক্তার, বাদীপক্ষের আইনজীবী আবদুর রশিদ ও মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাঁরা জানান, রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২৩ আসামির মধ্যে ১৯ জন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। এ মামলার সব আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে চারজন পলাতক।
আদালতে উপস্থিত ১৯ আসামি হলেন—আবুল বাশার কাশু, জহির উদ্দিন মেম্বার, আবু কালাম, ডালিম, ইয়াকুব আলী, রফিক, হালিম, রুহেল, শাহাবুদ্দিন, লিয়াকত আলী মাস্টার, সিরাজ উদ্দিন, ইদ্রিস আলী, মোহাম্মদ হোসেন, আহাদ আলী, ইউনুছ আলী, ফারুক হোসেন, গোলাম আযম, আবদুল হাই ও খোকন।
সাজাপ্রাপ্ত পলাতক চার আসামি হলেন আল-আমিন, রুহুল আমিন, তাজুল ইসলাম ও হারুন।
এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি আবুল বাশার কাশু ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবুকে সোনার নৌকার কোটপিন উপহার দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০২ সালের ১২ মার্চ আড়াইহাজার থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ছোট ভাই বারেক, ফুফাতো ভাই বাদল, ছাত্রলীগ নেতা ফারুক ও কবীরকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। গোপালদী ইউনিয়ন বিএনপির তৎকালীন সভাপতি আবুল বাশার কাশু ও তাঁর সমর্থকরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। পরে নিহত বারেকের বাবা সাবেক ইউপি সদস্য আজগর আলী বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় ২৩ জনকে আসামি কারে মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ২৩ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলা চলাকালীন বাদী আজগর আলী মারা যাওয়ার পর তাঁর ছেলে শফিকুল ইসলাম মামলার বাদী হন। মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে আদালত প্রত্যেকের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে দীর্ঘ ১৫ বছর পর চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় দেন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী। দ্রুত রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী খোরশেদ আলম মোল্লা।