হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেছেন।

আদালতে তাঁর মৃত্যুদণ্ডে রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজ হওয়ার পর আজ বুধবার কাশিমপুর হাই সিটিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রিভিউ আবেদন খারিজের রায় মুফতি হান্নানকে পড়ে শোনানো হয়।

কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান জানান, রিভিউ আবেদন খারিজের রায় শোনানো হলে মুফতি হান্নান ও তাঁর সহযোগী শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়ার ব্যাপারে মত প্রকাশ করেন। 

এর আগে মঙ্গলবার রাত ১২টার পর রায়ের কপি কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এসে পৌঁছায়। পরে আজ সকাল ১০টার দিকে মুফতি হান্নান ও শাহেদুল আলম ওরফে বিপুলকে রিভিউ আবেদন খারিজের রায় পড়ে শোনানো হয়।

রায় কার্যকরের ব্যাপারে জেল সুপার বলেন, সকল প্রকার আইনি প্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই কেবল রায় কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে কারা কর্তৃপক্ষ। রায় কার্যকরের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ প্রস্তুত রয়েছে।

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (রহ.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত এবং আনোয়ার চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন।

এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত ৫ আসামির মধ্যে মুফতি হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। মুফতি হান্নান ও শরীফ শাহেদুল বিপুলকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে এবং দেলোয়ার হোসেন রিপনকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। পরে গত বছরের ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল হাইকোর্টের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ১৪ জুলাই আপিল করেন দুই আসামি হান্নান ও বিপুল। অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রিপন আপিল না করলেও আপিল বিভাগ তাঁর জন্য রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ করেন।

আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর আসামিদের আপিল খারিজ  হয়ে যায়। গত ১৭ জানুয়ারি এ রায় প্রকাশের পর আসামিরা রিভিউ করেন। ১৯ মার্চ দেওয়া রিভিউ খারিজের রায় মঙ্গলবার প্রকাশিত হয় এবং বুধবার তা তাঁদের পড়ে শোনানো হয়। কারা কর্তৃপক্ষ এখন সরকারি নির্দেশনার অপেক্ষায়।