দেশে ডিজিটাল প্রতারণার চেষ্টা হচ্ছে : বাণিজ্যমন্ত্রী

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, প্রচলিত বাণিজ্যের পাশাপাশি দেশে ই-বাণিজ্য বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি ডিজিটাল প্রতারণার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়ে কমিটি গঠন করে এসব ক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে সরকার।
বাণিজ্যমন্ত্রী আজ বুধবার বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এ কথা বলেন। রাজধানীতে টিসিবি মিলনায়তনে ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
ভোক্তাদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য বিশেষ একটি কমিটি গঠন করার নির্দেশ দেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রমের ফলে এখন ভোক্তাদের অভিযোগ অনেক কমে এসেছে, পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ২৪ হাজার ৫৩০টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১৭ কোটি ৭২ লাখ ৫৬ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ভোক্তাদের সুরক্ষায় তথ্য প্রযুক্তিসহ সংশ্লিষ্ট সব সেক্টরের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। তবে ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষায় নিজেদের সচেতন থাকতে হবে।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব। দেশ পরিচালনার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডিজিটাল কার্যক্রম চালু হয়েছে। দেশে পাঁচ হাজার ২০০টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে প্রযুক্তির সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। দেশের ছয় কোটি ৭০ লাখ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ১১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে। অফিসগুলো পেপারলেস হচ্ছে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময় ছিল যখন মানুষ তাদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন ছিলে না। এখন আর সেই দিন নেই। ভোক্তারা এখন তাঁদের অধিকার আদায়ে সচেতন। তাঁরা যাতে তাদের অধিকারকের বিষয়ে অভিযোগ দিতে পারে সেজন্য জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর গঠন করেছি।’ তিনি আরো বলেন, ‘ভোক্তারা দেশের যেকোনো প্রান্তেই প্রতারণার শিকার হউক না কেন তারা এই অধিদপ্তরে অভিযোগ করতে পারবে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘ভোক্তাদের সচেতনতার বিষয়ে আমাদের আরো বেশি কাজ করতে হবে। এখন দেশের ৯০ শতাংশের বেশি লোক এ বিষয়ে কোনো ধারণা রাখে না।’
গোলাম রহমান বলেন, ‘দেশের সব পর্যায়ের লোক কোনো না কোনোভাবে ভোক্তা। যে শিশুটা এখনি জন্মালে সেও ভোক্তা এবং যে এখনি ব্যক্তিটা মৃত্যবরণ করল সেও ভোক্তা। তা মানে একজন ব্যক্তি জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যুর পরও ভোক্তা। এটার বিষয়ে সবাইকে জানতে হবে এবং জানাতে হবে।’
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম লস্করের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব শুভাশীষ বসু, শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, ভোক্তা অধিদপ্তরের যুগ্ম সচিব ড. মো. শাহাদাৎ হোসেইন।
অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতায় ১০ জন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। আলোচনা শেষে মন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।