স্মার্টফোন চুরির অভিযোগে মা-মেয়ে-নাতনিকে নির্যাতন!

স্মার্টফোন চুরির অপবাদ দিয়ে মা ও মেয়েকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা দুই বছরের শিশুকেও আহত করা হয়।
আহত তিনজনকে গতকাল বুধবার রাত ৮টায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই দিন বিকেলে ঝালকাঠি সদর উপজেলার আগরবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতরা জানান, গত ৩ মার্চ দুপুরে আগড়বাড়ী গ্রামের মুদি দোকানদার দেলোয়ার হোসেনের মেয়ের বিয়ের দিন ছিল। বিয়েতে নিমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নেন প্রতিবেশী দিনমজুরের স্ত্রী (৪৫), তাঁর মেয়ে (২৫) ও নাতনি (২)। বিয়ের অনুষ্ঠানে একজন বরযাত্রীর স্মার্টফোন হারিয়ে যায়। এ খবর জানতে পেরে কনের বাবা দেলোয়ার হোসেন ও তাঁর নাতি জুয়েল হোসেন তাঁদের প্রতিবেশী মা ও মেয়েকে স্মার্টফোন চুরির অপবাদ দেন। এ ঘটনা নিয়ে পাঁচ দিন ধরে দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ চলছে। বুধবার বিকেলে (সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে) দেলোয়ার ও জুয়েল লোকজন নিয়ে মা, মেয়ে ও শিশুকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে নিয়ে প্রথমে মা ও মেয়েকে বাঁশের লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। ‘মোবাইল বের করে দে’ বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয় তাঁদের।
পিটুনি খেয়ে শিশুটির নানি বলেন, ‘আমরা মোবাইল ফোন নিইনি।’
এতে আরো ক্ষিপ্ত হন দেলোয়ার ও জুয়েল। একপর্যায়ে ওই দুই নারীকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রশি নিয়ে আসেন জুয়েল। রশিটি মুড়িয়ে চাবুকের মতো তৈরি করেন। রশি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন তাঁদের। এ সময় ওই শিশুটিও আহত হয়। প্রতিবেশীরা তাঁদের তিনজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
সদর হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডের বিছানায় ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন দুই মা। তাঁদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রশির দাগ আটকে আছে মা ও মেয়ের পিঠে। মাথা ও হাতেও আঘাত রয়েছে তাঁদের। শিশুটির মাথায়ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
দেলোয়ার হোসেন মারধরের কথা অস্বীকার করে জানান, তারা নিজেরাই মারামারি করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন জানান, বুধবার রাতে পুলিশ ওই এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে মারামারি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় আহতদের ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি।