শরীয়তপুরে নিখোঁজ দুই মাটিকাটা শ্রমিকের লাশ উদ্ধার

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের খেজুরতলা নামক স্থানে মেঘনা নদী থেকে দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে নদী থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার চয়রা গ্রামের শহীদুল ইসলামের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩০) ও পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইখোলা গ্রামের নওশের আলীর ছেলে মাহাবুব প্রামাণিক। নিহত দুজন কুচাইপট্টি এলাকায় মাটিকাটা শ্রমিকের কাজ করতেন।
গোসাইরহাট থানা সূত্র জানায়, স্থানীয় একটি চক্র রাতে নদীর তীর থেকে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে। আর ওই চক্রটি সিরাজগঞ্জ ও পাবনার শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার কাজ করাত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই চক্রটি আনুয়াকাঠি এলাকা থেকে দুটি ট্রলার নিয়ে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন সংবাদে গ্রামবাসী তাদের বাধা দেওয়ার জন্য সংঘবদ্ধ হয়েছিল। এই বিষয়টি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পুলিশকে জানান। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাটিকাটা শ্রমিকরা পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একটি ট্রলারসহ ২৪ জন শ্রমিককে আটক করে। পরে তাঁদের থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শুক্রবার বিকেলে এলাকাবাসী মেঘনা নদীতে দুটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশকে জানায়। খবর পেয়ে গোসাইরহাট থানার পুলিশ রাতে মেঘনা নদীর তীর থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এদিকে নিহত হাফিজুর রহমানের ভায়রা হাসেম মিয়া বলেন, ‘আমার ভায়রা মাটিকাটা শ্রমিকের কাজ করেন। মাটি কাটার জন্য তাঁদের এ এলাকায় কে এনেছে তা আমরা জানি না। বুধবার খবর পাই আমার ভায়রা ও আরো এক ব্যক্তির কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁদের খুঁজতে এসে লাশের সন্ধান পাই। কীভাবে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাও আমরা বলতে পারছি না।’
গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউপির চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন বলেন, ‘দীর্ঘদিন থেকে একটি চক্র নদীর তীর থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছিল। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার উপজেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। আর গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মাটি কাটার সময় গ্রামবাসী বাধা দেবে এমন খবর পেয়ে আমি পুলিশে খবর দিই। পুলিশ সেখান থেকে কয়েকজন শ্রমিককে আটক করেছিল। পরের দিন এলাকায় শুনতে পাই মাটি কাটার দুই শ্রমিক নিখোঁজ। বৃহস্পতিবার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নিয়ে ট্রলার করে মেঘনা নদীতে ওই স্থান পরিদর্শন করেছি। শুক্রবার লাশ উদ্ধারের কথা শুনতে পেয়েছি।’
গোসাইরহাট থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘২৮ ফেব্রুয়ারি মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন সংবাদ পেয়ে একটি ট্রলারসহ ২৪ জন শ্রমিককে আটক করেছিলাম। তারা মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে চলে যায়। শুক্রবার দুই ব্যক্তির লাশ মেঘনা নদী থেকে উদ্ধার করার পর তাদের মাটিকাটা শ্রমিক হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এ বিষয়ে এখনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’