ফাঁসির আসামি মুফতি হান্নানের রিভিউ আবেদন

সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা মুফতি হান্নান রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবীর মাধ্যমে মুফতি হান্নান আপিল দায়ের করেন। আগামী সপ্তাহে এ বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুফতি হান্নানের আইনজীবী এন কে দাস।
এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়েছে। কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মিজানুর রহমান বিষয়টি জানান।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া অপর দুই আসামি হলেন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) সদস্য শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল এবং দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন।
এ মামলার বাকি দুই আসামি মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে হাইকোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। আপিল না করায় তাঁদের ওই সাজাই বহাল রয়েছে। দণ্ডিত পাঁচ আসামির সবাই কারাগারে আছেন।
জানা যায়, গত ১৭ জানুয়ারি আপিল বিভাগের ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে পুনর্বিবেচনা করতে হয় আসামিপক্ষকে। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর দণ্ডাদেশ কার্যকর করার ক্ষেত্রে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন ও সর্বশেষ দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারে আসামিরা। রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দিলেই দণ্ডাদেশ কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকবে না।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজারে বাংলাদেশে নিযুক্ত তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। এতে আনোয়ার চৌধুরী আহত হন। পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ নিহত হন তিনজন।
২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপনকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া মহিবুল্লাহ মফিজ ও মুফতি মঈন উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ আসামিদের আপিল খারিজ করে গ্রেনেড হামলা ও তিনজনকে হত্যার দায়ে মুফতি আবদুল হান্নানসহ তিন জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। পরে বিচারিক আদালত তাঁদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টাসহ হরকাতুল জিহাদের ১৩টি নাশকতামূলক ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে হত্যার পেছনের মূল হোতা হিসেবে ধরা হয় মুফতি হান্নানকে। ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সভামঞ্চের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। মুফতি হান্নান ওই মামলারও আসামি।