‘খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়বে’

নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) ঘটবে। তখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়বে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার পাগলা এলাকায় মেরি অ্যান্ডারসন ভাসমান রেস্তোরাঁর স্থানে সোনারগাঁও ভাসমান রেস্তোরাঁ ও বারের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শাজাহান খান বলেন, ‘রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনা যদি একশ নম্বর পায়, সেখানে খালেদা জিয়া ১০ নম্বর পাবে। কারণ জীবনে তিনি (খালেদা জিয়া) এসএসসিও পাস করেন নাই। সুতরাং দক্ষতার দিক থেকে শেখ হাসিনা এগিয়ে।’
মন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। দেশকে কোথায় নেবেন, আগামী নির্বাচনে জনগণকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে অ্যাক্সিডেন্ট (দুর্ঘটনা) ঘটবে। আর তা হলো বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়ক থেকে খালে গিয়ে পতিত হবে। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশ কিন্তু খাল বা ব্রিজ ভেঙে নদীতে পড়বে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাশেদ খান মেনন বলেন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর বিএনপি এখন বিদেশিদের কাছে নাকিকান্না করছে।
পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ কোথায়? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়, এই কমিশনে জনগণের ইচ্ছারই প্রতিফলন হয়েছে। কিন্তু সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হলো। আসলে তারা (বিএনপি) এই নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে যে তাদের (বিএনপি) বেহাল অবস্থা হবে, কমিশনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার মাধ্যমে তা ঢাকতে চায়। তারা জানে, নির্বাচনে তারা জিতবে না। ২০১৪ সালের মতো যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে তারা হারিয়ে যাবেন।’
মেনন বলেন, ‘দু-তিন ধরে চিৎকার করার পর হঠাৎ করেই বিএনপির সেক্রেটারি বললেন আমরা নির্বাচন কমিশনের কাজ দেখব, তারপর কথা বলব। তাহলে এ কদিন ধরে এত কথা বলার অর্থ কী? তারা যে পরাজিত হবে তার ক্ষেত্র তৈরি করে প্রশ্ন তুলতে চায়। আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, আবার তারা বিদেশিদের কাছে নাকিকান্না করছে।’
পর্যটনমন্ত্রী আরো বলেন, পর্যটনশিল্পের বিকাশের জন্য দেশে নতুন আরো ৬৮টি স্থানকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এ জন্য সরকার বর্ধিত ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রের জন্য মডেল তৈরি করে অবকাঠামোগতভাবে কাজ শুরু করা হবে। এরই মধ্যে ১২টি স্থানে কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে একজন পর্যটকের জন্য ১১ জন মানুষের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ হবে।
রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে পর্যটন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। পর্যটনক্ষেত্রে ল্যান্ডমার্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। পর্যটন শুধু বিনোদন হিসেবেই নয়, শিল্পেও পরিণত হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে এটি গার্মেন্টসশিল্পের চেয়ে বেশি উন্নতি লাভ করবে।
তবে জঙ্গিবাদের কারণে এখন বিদেশি পর্যটকদের আগমন কমেছে উল্লেখ করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান অপরূপ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এস এম গোলাম ফারুক, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব অশোক মাধব রায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জ্ঞান রঞ্জন শীল, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আতাহার আলী।