ময়নাতদন্তের জন্য ৩ শ্রমিকের লাশ উত্তোলন

আদালতের নির্দেশে সিলেটের টিলা ধসে নিহত তিন শ্রমিকের লাশ দাফনের আট দিন পর নেত্রকোনা থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সদর উপজেলার কালিয়ারা-গাবড়াগাতী ইউনিয়নের মশুয়া-কর্ণখলা গ্রামের কবর থেকে তাঁদের লাশ তোলা হয়।
গ্রামের মসজিদের পাশ থেকে দুই শ্রমিক ও মশুয়া গ্রামের পারিবারিক কবর থেকে অপর শ্রমিকের লাশ উত্তোলন করা হয়।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পূর্ণেন্দু দেব, জাবের মো. সোয়াইব ও শ্রমিক নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সারিফ খান পাঠান।
তিন শ্রমিক হলেন কর্ণখলা গ্রামের জইন উদ্দিনের ছেলে জাহের উদ্দিন (৪০),আবদুর রশিদের ছেলে আল হাদিছ (২০) ও মশুয়া গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে কাদির মিয়া (২০)।
গত ২৩ জানুয়ারি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ শাহ আরপিনসংলগ্ন মটিয়া টিলায় একটি গর্ত খুঁড়ে পাথর উত্তোলনের সময় টিলা ধসে তাঁদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় গুরতর আহত হয়েছেন নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালিয়ারা-গাবড়াগাতী ইউনিয়নের মশুয়া গ্রামের মোতালেব বেগের ছেলে রফিক বেগ (১৮)।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পূর্ণেন্দু দেব বলেন, টিলা ধসের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যুর পর সিলেট জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাফায়াৎ মোহাম্মদ শাহেদুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সিলেট জেলা পুলিশও একটি তদন্ত কমিটি করে। এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার পরদিন থানার উপপরিদর্শক তরিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন।
পূর্ণেন্দু দেব আরো বলেন, এ ঘটনায় আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য তিনটি লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ বিকেল সোয়া ৪টার দিকে লাশ তোলা শুরু হয়। উত্তোলিত লাশ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্যে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, ওই টিলা ধসের ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবর জানালেও দুটি মরদেহের সন্ধান পেয়েছিল পুলিশ। পরে আরো তিনজন নিহতের সন্ধান পাওয়া যায়।
টিলা ধসের ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার আগেই মালিকপক্ষের লোকজন ওই দিন নিহত শ্রমিকদের লাশ তাঁদের নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে গোপনে দাফন করার ব্যবস্থা করেন। তবে পূর্বধলা থানা পুলিশ খবর পেয়ে জারিয়ার খোকন মিয়া (৩৫) ও কান্দাপাড়া গ্রামের আবদুল কুদ্দুস ওরফে আসিফের (২৫) লাশ উদ্ধার করে ঘটনার পরদিন ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের লোকদের কাছে হস্তান্তর করে।
পরিদর্শক রুহুল আরো জানান, থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে এই হত্যা ও হত্যার পর লাশ সরিয়ে ফেলার (গুম) অভিযোগে দায়ের মামলায় এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আসামি গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা রুহুল।