‘সুন্দরী নারী’র মাধ্যমে ফাঁদ পেতে প্রতারণা, গ্রেপ্তার ২

‘সুন্দরী নারী’র মাধ্যমে ফাঁদ পেতে লোকজনকে প্রতারিত করার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় ঢাকার বাড্ডা লিংক রোড এলাকা থেকে পিবিআই ঢাকা মহানগরের একটি বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন ফাহাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ওরফে রেজভী ও শারমিন আক্তার টুম্পা। তাদের কাছ থেকে এক ধনাঢ্য ব্যক্তির আপত্তিকর পাঁচটি অশ্লীল ছবিসহ দুটি মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিএমপি নিউজ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক খবরে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ফোন নম্বর বা ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করে চক্রটির পুরুষ সদস্য নিজেকে ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে কাজের সুবিধা মতো সখ্য গড়ে তোলে। পরিচয়ের একপর্যায়ে ওই তরুণীকে নিয়ে তাঁর সহকর্মী বলে বিভিন্ন নামি-দামি চাইনিজ রেস্তেরাঁয় চা/কফির প্রস্তাব দিয়ে আড্ডা দেয়। কিছুদিন পরে চক্রটি ওই তরুণীকে ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। চক্রটি বন্ধুত্বের সুবাদে মেয়েটিকে নিয়ে ব্যবসায়ীর সঙ্গে এককভাবে গোপনে ওই ব্যবসায়ীর অফিস, ফ্ল্যাট বা অন্য কোনো নিরিবিলি গোপন স্থানে যায় এবং সেখানে গিয়ে শারীরিক সর্ম্পক তৈরি করে ছবি তুলে রাখে। চক্রটি পরে ওই ছবি প্রকাশ করে দেওয়ার কথা বলে বড় অঙ্কের অর্থ দাবি করে। চক্রের চাহিদা মতো অর্থ না দিলে উত্তোলন করা ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবে বা পরিবারকে জানিয়ে দেওয়াসহ তাঁর সামাজিক সম্মান বা মর্যাদা ক্ষতি করার হুমকি দেয়। এতে কাজ না হলে তারা বিভিন্ন সময় ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টা করার মামলা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।
ডিএমপি জানিয়েছে, ঢাকার গুলশান এলাকার বাসিন্দা এক ব্যবসায়ী ওই চক্রটির শিকার হন। তিনি গত ১২ জুন ভাটারা এলাকার অটো মিউজিয়াম নামের একটি গাড়ির শো-রুমে গাড়ি কিনতে যান। সেখানে ওই চক্রের ফাহাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ওরফে রেজভীর সঙ্গে পরিচয় হয়। ফাহাদ তাকে একাধিক গাড়ির তথ্য দিয়ে নিজেকে একজন গাড়ি ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে তাঁর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে। একপর্যায়ে চক্রের ফাহাদ তাকে তার নিয়োগ করা বান্ধবীর চাকরির প্রয়োজনের কথা বলেন। গত ১৫ আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ফাহাদ তার বান্ধবীকে নিয়ে ওই ব্যক্তির উত্তরার অফিসে যান। সেখানে ফাহাদ তার বান্ধবীকে ব্যবসায়ীর অফিস রুমে দিয়ে কৌশলে সরে গিয়ে গোপনে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে রাখে। পরে গত ১৭ আগস্ট ব্যবসায়ীর অফিসে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া টুম্পার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়াসহ তার পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠানোর হুমকি দেয়। এতে ওই ব্যবসায়ী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে একেবারে ভেঙে পড়েন। ওই ঘটনার বিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করা হয়।