সিনহা হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপ ছাড়া সব আসামির স্বীকারোক্তি

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার ১৩ আসামির মধ্যে ১২ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুধু টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এই মামলায় কোনো জবানবন্দি দেননি।
আজ বুধবার সকাল ১১টার দিকে এই মামলার চার আসামি পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন ও আবদুল্লাহ আল মামুন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী সংস্থা র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
পরে কনস্টেবল সাফানুর করিম ও কামাল হোসেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের খাসকামরায় এবং এএসআই লিটন মিয়া ও কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন তামান্না ফারাহর খাসকামরায় জবানবন্দি দেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের জবানবন্দি শেষ হয়। পরে তাদের জেলঅ কারাগারে
এর আগে সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদালত প্রাঙ্গণে গণমাধ্যমের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাবের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল ইসলাম বলেন, 'সিনহা হত্যা মামলায় ১৩ জন আসামির মধ্যে ১২ জনই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। শুধু দুই নম্বর আসামি বরখাস্ত ওসি প্রদীপ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়নি। এতে মামলা তদন্তে কোনো বিঘ্ন ঘটবে না।'
'স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিরা ঘটনার সবিস্তারে বর্ণনা দিয়েছেন। আশা করি, তারা আমাদের কাছে যা স্বীকার করেছেন আদালতেও তাই বলেছেন', যোগ করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
এর আগে দুপুরে র্যাব-১৫ কক্সবাজারের উপ-অধিনায়ক মেজর মেহেদী হাসান জানিয়েছিলেন, গত ২৪ আগস্ট সিনহা হত্যা মামলার আসামি পুলিশের চার সদস্যকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দ্বিতীয় দফায় চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। আদালতের আদেশ পেয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশের চার সদস্যকে দ্বিতীয় দফা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে র্যাব। আজ চার দিনের রিমান্ড শেষে তাঁদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে আদালতে আনা হয়েছে।’
এর আগে সিনহা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী ও টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলালকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
লিয়াকত ও নন্দদুলাল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেও প্রদীপ রাজি হননি। তাঁরা সবাই এখন কারাগারে রয়েছেন। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যসহ এ পর্যন্ত আট আসামি সিনহা হত্যা মামলায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটি মামলা করে। এরপর সিনহার বোন নয়জন পুলিশ সদস্যকে আসামি করে কক্সবাজার আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন।