রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আজও দিনভর সংঘর্ষ, আহত অর্ধ শতাধিক

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সপ্তাহজুড়ে চলমান সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। আজ বুধবারও সারা দিন থেমে থেমে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষে অন্তত আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক।
এদিকে, সংঘর্ষ থামাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে আসেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজ মো. আনোয়ার হোসেন।
গত সপ্তাহজুড়েই কক্সবাজারের উখিয়ার এক নম্বর কুতুপালং ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ ও সংঘাত চলে আসছে। এ সময় দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত এক নরীসহ আটজনের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে একসঙ্গে চারজন নিহত হওয়ার ঘটনায় উক্ত ক্যাম্পে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। এ কারণে আজ বুধবার সকাল থেকে সারা দিন দুই পক্ষের মধ্যে প্রকাশ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় নতুন করে উভয় পক্ষের শতাধিক রোহিঙ্গা আহত হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে আজ সকালে এপিবিএনের এক সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আজ সকাল ১০টার পর থেকে কুতুপালং নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এ ঘটনায় আতঙ্কে দলে দলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ইনচার্জের অফিসে আশ্রয় নেয়। এ সময় রোহিঙ্গাদের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতেও দেখা যায়।
রোহিঙ্গারা বলছে, ক্যাম্পের অভ্যন্তরে ইয়াবা ব্যবসা, দোকান থেকে চাঁদাবাজি ও এলাকাভিত্তিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সন্ত্রাসী মুন্না গ্রুপ ও আনাছ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মধ্যকার গোলাগুলির ঘটনায় ক্যাম্প সংলগ্ন বাংলাদেশি গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ক্যাম্পে সকাল থেকে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্য, পুলিশ, আনসার ও সেনাবাহিনী টহল জোরদার করে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে চারজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক করে পুলিশ।
এদিকে, আজ বিকেলে এ পরিস্থিতির মধ্যেই পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে ডিআইজ মো. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে, গত মঙ্গলবার নিহত চারজনের মধ্যে নুরুল হুদা নামের একজন বাংলাদেশি রয়েছেন। আজ সকালে নিহত নুরুল হুদার ভাই ইসমাইল উখিয়া থানায় এসে তাঁর মরদেহ শনাক্ত করেন। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।