গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় আলোচিত উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জালাল উদ্দিন হত্যা মামলার আপিলের রায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত। এ মামলায় আরও পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চ।

বিচারপতি শহিদুল করিম ও আক্তারুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রাপ্তরা হলেন কাপাসিয়া উপজেলার বাটপাড়া এলাকার সাবেক উপজেলা ছাত্রদল নেতা ফারুক হোসেন, কাপাসিয়া উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি পাবুর এলাকার আব্দুল আলীম, যুবদল কর্মী জজ মিয়া ও আল আমিন এবং নলগাঁও কেওনপাড়া এলাকার ছাত্রদল কর্মী বেলায়েত হোসেন বেল্টু।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন কাপাসিয়ার খোদাদিয়া এলাকার উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হালিম ফকির, কাপাসিয়া কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক জুয়েল ও যুবদলকর্মী মাহবুবুর রহমান রিপন এবং পাবুর এলাকার ছাত্রদল কর্মী ফরহাদ হোসেন ও সাংবাদিক আতাউর রহমান। মামলার অপর আসামি যুবদল কর্মী জয়নাল আবেদীনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে আল আমিন ও আতাউর আপন ভাই।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট কাপাসিয়া উপজেলার বলখেলা বাজার এলাকায় বাড়ির পাশে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জালাল উদ্দিন সরকারকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় কাপাসিয়া উপজেলা যুবদলের ও ছাত্রদলের সভাপতিসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন নিহতের বড় ভাই মিলন সরকার।

মামলার দীর্ঘ শুনানি ও ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর জেলার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূঁইয়া ওই মামলার রায় দেন। রায়ে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন বিচারক।

পরে আসামিরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন। শুনানি শেষে হাইকোর্টের আপিল বেঞ্চের বিচারক শহীদুল করিম ও আক্তারুজ্জামান আজ এ মামলার ডেথ রেফারেন্সের রায় দেন। আদালত ভার্চুয়ালি এ রায়ে উল্লেখিত পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন। অপর পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও একজনকে খালাস দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে জজ মিয়া, আল আমিন, জুয়েল, হালিম ফকির ও মাহবুবুর রহমান রিপন পলাতক রয়েছে।

রায় ঘোষণাকালে নিহতের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে শাহরিয়ার জালাল হৃদি ও চাচাতো ভাই নয়ন সরকারসহ পরিবারের সদস্যরা ও আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।