মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন শুক্রবার

বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন আগামীকাল শুক্রবার। এর আগে চারবার ওই সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবারের সম্মেলনের মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা পেতে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সকাল ১১টায় রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ কারণে মৎস্যজীবী লীগের এবারে জাতীয় সম্মেলনটি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। একই সঙ্গে সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যেও নতুন উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে মৎস্যজীবী লীগের নতুন নেতৃত্বে আসতে ইচ্ছুকরাও তৎপরতা শুরু করেছেন এরই মধ্যে।
বিশেষ করে শীর্ষ দুই পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা জোর লবিং-তদবিরে নেমেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীদের পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দলীয় সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়। সমর্থকদের নিয়ে কেউ কেউ এসব কার্যালয়ে শোডাউনও করছেন।
মৎস্যসম্পদ বিকাশের এবং মৎস্যজীবীদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে ২০০৪ সালের ২২ মে মৎস্যজীবী লীগ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে চারটি জাতীয় সম্মেলন হলেও এত দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সহযোগী কিংবা ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি ছিল না মৎস্যজীবী লীগের। আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিলে গঠনতন্ত্র সংশোধনের মাধ্যমে এটিকে সহযোগী সংগঠনের মর্যাদা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি এর মধ্যে মৌখিকভাবে মৎস্যজীবী লীগ নেতাদের জানিয়েও দিয়েছেন দলের নীতিনির্ধারক নেতারা। দলীয় এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে মৎস্যজীবী লীগ হবে আওয়ামী লীগের অষ্টম সহযোগী সংগঠন।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ বলেন, ‘কাগজে-কলমে না হলেও মৎস্যজীবী লীগকে আপাতত ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে সহযোগী সংগঠনের মর্যাদাও দেওয়া হতে পারে। যেহেতু মৎস্য একটি বড় সেক্টর। আমরা এ খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছি। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণভাবে প্রচুর মানুষ এ খাতে কাজ করেন। সবকিছু বিবেচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে মৎস্যজীবী লীগকে দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন।’
গত মাসের শেষ সপ্তাহে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী ও একটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনের তারিখের কথা জানানো হয়। তাতে মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের তারিখও জানানো হয়।
নেতৃত্বের দৌড়ে যারা : আগামী সম্মেলনে নতুন করে সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন তারা হচ্ছেন সংগঠনের বর্তমান সদস্য সচিব ও সাবেক কার্যকরী সভাপতি শেখ আজগর নস্কর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহাম্মদ আলম, ইসলাম আলী, সাইদুর রহমান সাইফুল আলম মানিক, মোহাম্মদ ইউনুস ও হাজি ফিরোজ মাহমুদ।
আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির সদস্য সচিব আজগর নস্কর বলেছেন, সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যাশা করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়েছে প্রধান অতিথি হবেন ওবায়দুল কাদের।
মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক নারায়ণ চন্দ্র চন্দ জানান, তাদের সম্মেলন প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। কাউন্সিলর-ডেলিগেটদের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সম্মেলনের মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। অতিথিদের নিমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
২০০৪ সালের ২২ মে আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগের সমমনা সংগঠন হলেও এতদিন সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা ছিল না। দলের নেতাদেরও এই সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না। এবারই প্রথম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে মৎস্যজীবী লীগ সম্মেলন করতে যাচ্ছে। এজন্যই মৎস্যজীবী লীগের নেতারা এবারের সম্মেলনকেই প্রথম সম্মেলন বলছেন।
‘মাছে-ভাতে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে এবারের মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সবধরনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে এনেছে প্রস্তুতি কমিটি। মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে ১০টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।