ভৈরবে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সিজারের পর প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর ঘটনায় শহরের উত্তর ভৈরবপুর স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার সাজেদা-আলাল নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর করেছে রোগীর স্বজনরা। নিহত রোগীর নাম রাশেদা বেগম। তিনি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের মানিকদী মধ্যপাড়া এলাকার আবুল বাশারের স্ত্রী।
স্বজনদের অভিযোগ, সিজার করার সময় অ্যানেসথেসিয়া ভুল করার কারণে রাশেদা বেগম মারা যান। ঘটনার পর পর হাসপাতালের ম্যানেজার, ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা পালিয়ে যান। সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ স্বজনরা এলাকা ছাড়ে। হাসপাতাল এলাকায় পুলিশ মোতায়েন আছে।
রাশেদা বেগমের স্বামী আবুল বাশার অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার গর্ভবতী স্ত্রী সুস্থ অবস্থায় রোববার রাতে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এক সপ্তাহ আগে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালের ডাক্তার নাহিদা নাজনীনের কাছে গেলে তিনি আল্ট্রাসনোগ্রাফ করে জানান রোগী ভালো আছে। হাসপাতালে সিজার করতে রোববার তাঁকে ভর্তি করা হয়। আজ সোমবার সকালে আমার স্ত্রী সুস্থ অবস্থায় হেঁটে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে। ফার্মেসি থেকে ওষুধ এনে দেওয়ার পর ডা. নাহিদা নাজনীন সকাল সাড়ে ১০টায় অপারেশন শুরু করেন। ডা. আবদুল্লাহ-আল মামুন অপারেশনের সময় অ্যানেসথেসিয়া দেন।
আবুল বাশার বলেন, “২০ মিনিট পর ডাক্তার আমাকে জানান, ‘সিজার করার পর ভূমিষ্ঠ শিশু ভালো আছে। তবে মাকে ঢাকায় পাঠাতে হবে। তার অবস্থা ভালো নয়।’ একথা শুনার পর আমি দ্রুত অপারেশন থিয়েটারে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রী জীবিত নেই।”
এ বিষয়ে হাসপাতালের ডা. নাহিদা নাজনীনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর মোবাইলে ফোন দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে হাসপাতালের মালিক ডা. নজরুল ইসলাম মোবাইলে বলেন, ‘আমি অসুস্থ হয়ে কয়েকদিন যাবত বাসায় বিশ্রামে আছি। ঘটনার পর ডা. নাহিদা নাজনীন আমাকে ফোনে জানিয়েছেন, গর্ভবতীর সিজার সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। অপারেশনের পর সম্ভবত কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মহিলার শরীরে খিঁচুনি উঠে পাঁচ মিনিটের মধ্যে মারা যায়। এ সময় ওষুধ দেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না।’
নজরুল ইসলাম আরও বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসার সময় কোনো ডাক্তার ইচ্ছে করে রোগীকে মারে না। রোগী মারা যাওয়া দুঃখজনক। তাঁর দাবি, রোগীর স্বজনরা ঘটনার পর হাসপাতাল ভাঙচুর করে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বর্তমানে হাসপাতালে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।