ভৈরবে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা আরেক পুলিশ কর্মকর্তা করোনাজনিত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ এ
তথ্য জানিয়েছেন। এর সত্যতা স্বীকার করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি লুবনা ফারজানা এবং ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন।
আক্রান্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে রাতেই কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাপাতালের আইসোলেশন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
ডা. বুলবুল আরো জানান, গত শুক্রবার রাতে ভৈরব থানায় কর্মরত এক পুলিশ কর্মকর্তার করোনাভাইরাস পজেটিভ হলে তাকে ঢাকার কুর্মিটোলায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়। ওই রাতেই থানায় কর্মরত ওসিসহ দুই পরিদর্শক এবং ৬৪ পুলিশ সদস্যকে প্রাতিষ্ঠানিক ও
হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠিয়ে কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনস থেকে নতুন ৩৫ জন পুলিশকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আজকে আক্রান্ত পুলিশ কর্মকর্তা সেদিন থেকে শহরের শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়ামে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। সেখানকার কয়েকজনের নমুনা আইইডিসিয়ারে পাঠালে আজ রাতে আসা প্রতিবেদনে এই পুলিশ কর্মকর্তার পজেটিভ এবং অন্যান্যদের নেগেটিভ আসে। এ নিয়ে ভৈরবে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজনের করোনাভাইরাস পজেটিভ এলো।
দুই পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়া শহরের কমলপুর এলাকার আহমেদ ফার্মা নামের একটি ওষুধের দোকানের ফার্মাসিস্ট করোনায় আক্রান্ত হন। প্রথমদিন আক্রান্ত পুলিশ কর্মকর্তা এই ফার্মেসির ক্রেতা ছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজেটিভ এলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় কুর্মিটোলা হাসপাতালে। এদিকে ফার্মাসিস্টের আক্রান্তের কারণে শহরের কমলপুর র্যাব অফিসসংলগ্ন তাঁর বাড়ি, তাঁর যাতায়াতের কারণে তাঁর বাড়ি লাগোয়া নানার বাড়ি, আত্মীয়তার সূত্রে ভৈরবপুর মধ্যপাড়া এলাকার হাজী কাদির বেপারির বাড়ি, নিউ টাউন এলাকার তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের আগানগর গ্রামের তাঁর শ্বশুরবাড়ি লকডাউন করা হয়।
এর আগে শুক্রবার থেকেই ভৈরব উপজেলাকে লকডাউন করা হয়। উপজেলা লকডাউনের পাশাপাশি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিসা কর্মকর্তার (আরএমও) কক্ষ, পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (চন্ডিবের) এলাকার মর্ডান হাসপাতাল, শহরের কমলপুর এলাকার মনি ব্যাচেলার্সের (মেস) গলি, গলির মুখের দোকান, কেয়ার ফার্মেসি নামের একটি ওষুধের দোকান, উপজেলার কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের চক বাজার, আকবরনগর বাজার এবং শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর এলাকা সম্পূর্ণরূপে লকডাউনে রাখার নির্দেশনা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।
করোনা আক্রান্ত ওই পুলিশ সদস্যের সংস্পর্শে আসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ অপর চার চিকিৎসক এবং একজন স্বাস্থ্য সহকারীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়।