পরকীয়ার জেরে হত্যা, নারীসহ দুজনের মৃত্যুদণ্ড
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় পরকীয়া প্রেমের জের ধরে চাঞ্চল্যকর নবী হোসেন হত্যা ও লাশ গুমের মামলায় এক নারীসহ দুজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুর রহিম এ আদেশ দেন। সেইসঙ্গে প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় দুজনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন কাজী নজরুল ইসলাম (৩৫) ও সুমনা ওরফে শিলা (২৮)। রায় ঘোষণার সময় কাজী নজরুল ইসলাম উপস্থিত থাকলেও সুমনা ওরফে শিলা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুজনই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাসিন্দা। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন আশরাফুল রাসেল ও শরীফ মিয়া।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট আবু সাইদ ইমাম মামলার বরাত দিয়ে জানান, কাজী নজরুল ইসলামের সঙ্গে সুমনা বেগম শিলার বিয়ের পর দুজনের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে সুমনা বেগম শিলা কিশোরগঞ্জের ভৈরবের চণ্ডিবেড় দক্ষিণপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। সে সময় উত্তরপাড়া এলাকার বিবাহিত নবী হোসেনের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একই সময়ে আবারও নজরুল ইসলামের সঙ্গে সুমনার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নবী হোসেনের সঙ্গে সুমনার বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার জের ধরে ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর নবী হোসেনকে ফোন করে তাঁর ভাড়া বাসায় নিয়ে যান সুমনা। ওইদিন গভীর রাতে নজরুলের সহায়তায় নবী হোসেনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলাকেটে হত্যা করে। পরে লাশ ছয় টুকরো করে ভৈরবের কয়েকটি স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়।
২৩ ডিসেম্বর পুলিশ নিহতের মৃতদেহের আংশিক ও ২৫ ডিসেম্বর মৃতদেহের বাকি অংশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামি করে ভৈরব থানায় একটি মামলা করেন নিহতের স্ত্রী বিলকিছ বেগম। পরে মামলাটি সিআইডিতে পাঠানো হয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি চারজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট জহিরুল হক মামলাটি পরিচালনা করেন।