গণশুনানিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিরোধিতা ক্যাবের

পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শুরু করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর টিসিবি মিলনায়তনে এ গণশুনানি শুরু হয়।
প্রথমদিনে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বর্তমানের চেয়ে ২৩ দশমিক ২৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। আর ১৯ দশমিক ৫০ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।
এ বছরের ৩০ জুন গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয় এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। ঘোষণার চার মাসের মাথায় অক্টোবরে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে আবেদন করে ক্রেতা ও বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তাদের সেই আবেদনের ওপর গণশুনানি শুরু হয়েছে আজ থেকে।
গণশুনানিতে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরেন পাওয়ার ডেভলাপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) মহাব্যবস্থাপক। সেখানে যুক্তি হিসেবে দেখানো হয়, আসছে বছর সরকারের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়লে পিডিবির ঘাটতি হবে প্রায় সাড়ে আট হাজার কোটি টাকা।
পিডিবির জেনারেল ম্যানেজার (জিএম-বাণিজ্যিক) কাওসার আহমেদ বলেন, ‘১৮-১৯ অর্থ বছরে ইউনিট প্রতি ব্যয় পড়েছে ৫.৮৩ টাকা। বর্তমানে গড় পার ইউনিটের বিদ্যুতের ৪ টাকা ৮০ পয়সা। আমাদের ঘাটতি আছে ১ টাকা ৩ পয়সা।’
এর আগে কোন যুক্তিতে বিইআরসি দাম বাড়িয়েছে তা অজানা বলে মন্তব্য করে কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক সামসুল আলম। তিনি প্রশ্ন তোলেন এবারের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের যৌক্তিকতা নিয়েও।
সামসুল আলম বলেন, ‘ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব যে ঘাটতি থেকে এসেছে সেই ঘটতি যৌক্তিক কি না, ন্যায়সঙ্গত কি না- সেই বিবেচনাটি এই শুনানি প্রক্রিয়ায় অনুপস্থিত থেকে গেছে। এই সরবরাহ থেকে বিদ্যুত উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ প্রক্রিয়াতে যে ভ্যালু অ্যাড হচ্ছে, সেটা যৌক্তিক কি না, তাও যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ নেই।’
বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের ফাইন্ডিং হচ্ছে বর্তমান মূল্যহার ৪ টাকা ৭৭ পয়সা এবং ঘাটতি ৯৩ পয়সা। সেই হিসেবে মূল্য ১৯.৫০ বাড়ানোর প্রয়োজন বলে মনে করছে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি।’
এবারের গণশুনানিতে অংশ নিয়েছেন বিএনপির প্রতিনিধিরাও। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘পিবিডির হিসেবে বর্তমানে তেলচালিত কেন্দ্র আছে ৬২টি। যেগুলোতে পাঁচ হাজার মেগাওয়ার্টের বেশি উৎপাদন সম্ভব। আমার পক্ষ থেকে, বিএনপির পক্ষ থেকে ওই কথাটাই বলার চেষ্টা করছি। আপনার যেহেতু সম্পদ আছে, সেটাকে ইন্টারাকশানের ভেতরে নিয়ে এসে যদি ভোগান্তি কমানো যায় সেটাই তো ভালো।’
আজ দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় সঞ্চালন মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি। এর আগে ২০১৭ সালের নভেম্বরে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছিল বিইআরসি।