কৃষক লীগের ১০ম জাতীয় সম্মেলন আজ

স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে চাষাবাদে কৃষককে সহযোগিতা দেওয়া ও কৃষির সমৃদ্ধির জন্য ১৯৭২ সালে ১৯ এপ্রিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ কৃষক লীগ নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে কৃষক লীগ নামে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই তাঁর নেতারা তৃণমূলে কৃষকের পাশে কতটা দাঁড়াতে পেরেছেন তা প্রশ্নবিদ্ধ রয়েছে স্বয়ং দলের মধ্যে। আর এসব প্রশ্ন রেখে আজ বুধবার হতে যাচ্ছে আওয়ামী লগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের ১০ম জাতীয় সম্মেলন।
কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন কৃষক নেতা আবদুর রব সেরনিয়াবাত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করে। প্রতিষ্ঠাতার পর থেকে এখন পর্যন্ত নয়বার সম্মেলন হয়েছে কৃষক লীগের। ১০ম সম্মেলনকে ঘিরে কৃষকলীগের পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
সম্মেলনকে ঘিরে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রব দেখা গেছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নিজ নিজ পক্ষে জোর লবিং-তদবিরে ব্যস্ত সময় পার করছেন সংগঠনটির নেতারা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন ধরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশমঞ্চ তৈরিসহ বিভিন্ন আয়োজনে ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের। রাজধানীতে ব্যানার, ফেস্টুনসহ বিভিন্নভাবে প্রচার করছেন তাঁরা।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করা হবে।
পদপ্রত্যাশী
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চলছে পদ পদবির হিসেব নিকাশ। কে আসছেন নতুন নেতৃত্বে । সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে প্রায় দেড় ডজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে। তারা ধরণা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা-মন্ত্রীদের কাছে। আবার সমর্থকদের নিয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও ধানমণ্ডির দলীয় প্রধানের কার্যালয়েও শোডাউন দিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন কেউ কেউ।
সংগঠনের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার শামসুল হক রেজা সভাপতি পদে আসতে আগ্রহী। এছাড়া সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন তারা হলেন বর্তমান কমিটির সহ সভাপতি শামসুল হক রেজা ,খান আলতাফ হোসেন ভুলু, শেখ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, বদিউজ্জামান বাদশা, হারুনুর রশিদ হাওলাদার, শরীফ আশরাফ আলী, ওমর ফারুক। এছাড়াও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ সমীর চন্দ চন্দ্র, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট, আবুল হোসেন, আতিকুল হক আতিক, বিশ্বনাথ সরকার বিটু।
জাতীয় সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠিত হওয়ার কথা থাকলেও নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে এবার আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছাই প্রাধান্য পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ দুটিতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির আস্থাভাজন ত্যাগী ও দক্ষ নেতাদের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, কৃষক লীগের আগামী নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য পদপ্রত্যাশীদের চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ নানা মাধ্যমে আদ্যোপান্ত খোঁজ নিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট নেতাদের।