গণবদলির পর এবার কক্সবাজার জেলার আট থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পদে আট পরিদর্শককে পদায়ন করা হয়েছে। নতুন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান গতকাল শুক্রবার রাতে তাঁদের নিয়োগ দিয়ে অফিস আদেশ জারি করেন। আজ শনিবার দুপুরে তাঁরা স্ব স্ব থানায় যোগ দেন।

এর আগে গতকাল শুক্রবার পুলিশের সিনিয়র পরিদর্শক মর্যাদার আট কর্মকর্তা জেলা পুলিশে যোগ দেন। নতুন যোগ দেওয়া আট ওসি হলেন কক্সবাজার সদর মডেল থানায় শেখ মুনীর উল গীয়াস, টেকনাফ মডেল থানায় মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, উখিয়া থানায় আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ, মহেশখালী থানায় মো. আবদুল হাই, চকরিয়া থানায় শাকের মোহাম্মদ যুবায়ের, রামু থানায় কেএম আজমিরুজ্জামান, পেকুয়া থানায় মো. সাইফুর রহমান মজুমদার ও কুতুবদিয়া থানায় মো. জালাল উদ্দিন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, ‘কক্সবাজারের কনস্টেবল থেকে পুলিশ সুপার পর্যন্ত সব জনবল বদলি করা হয়েছে। বদলি হওয়া মোট জনবলের সংখ্যা এক হাজার ৪৮৭ জন। সমপরিমাণ জনবলও কক্সবাজার জেলা পুলিশে বদলি করা হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই এরইমধ্যে জেলা পুলিশে যোগ দিয়েছেন। আট থানার পর পর্যায়ক্রমে জেলা পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বদলি হয়ে আসা কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হবে।’

এর আগে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের নবনিযুক্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আনোয়ার হোসেন গতকাল শুক্রবার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন চাই। কক্সবাজারের পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা বাড়ুক। সেজন্য কক্সবাজারের পুলিশকে আমরা ঢেলে সাজাতে চাই।’

এত দিন কি তাহলে পরিবেশটা নেতিবাচক ছিল-জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এত দিন পুরো পরিবেশটা নেতিবাচক ছিল না, তবে কিছু সংকট ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। আমরা সংকট কাটিয়ে উঠতে চাই। এত দিন মানুষের অভিযোগ ছিল, কিছু পুলিশ সদস্য ঘুরে ফিরে কক্সবাজারে দায়িত্ব পালন করছেন। ওই অভিযোগটি আমলে নিয়ে আমরা কক্সবাজারে মোট এক হাজার ৪৮৭ জনকে বদলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বদলি শেষে কিছু শূন্যপদ নিয়োগসহ মোট এক হাজার ৫০৭ জন পুলিশকে যুক্ত করা হবে কক্সবাজারে।’

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও কক্সবাজার পুলিশের কয়েকটি সূত্র এনটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, কক্সবাজারের পুরো সেটআপ পরিবর্তন করে পুলিশের সুনাম ফিরিয়ে আনতে যা যা করার দরকার সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। গত ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাতে কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ রোডে পুলিশের গুলিতে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর পুলিশের ভাবমূর্তির সংকট দেখা যায়। ওই ঘটনায় সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ারের করা হত্যা মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ, পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ১১ জন পুলিশ সদস্য জেলহাজতে রয়েছেন।

এ ছাড়া নানাস্থান থেকে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে শুরু করে। অথচ, করোনাভাইরাসের শুরু থেকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল পুলিশ সদস্যরা। তখন সবাই তাদের প্রশংসা করে। এখন কক্সবাজারে হারানো সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে পুলিশ। এ ছাড়া কক্সবাজারে ইয়াবা বা মাদক সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে জনবল ঢেলে সাজানোর  সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।