মেয়ের ধর্ষণকারীদের পুড়িয়ে মারার দাবি জানালেন মা

ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে স্কুটির চাকা পাংচারের পর তা ঠিক করার নাম করে গণধর্ষণ করা হয় পশু চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রেড্ডিকে। পরে হত্যার পর তাঁকে তাঁরই স্কুটির জ্বালানি দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গত শুক্রবার এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় চার যুবককে। প্রিয়াঙ্কার মায়ের দাবি, তাঁর মেয়েকে যেভাবে পোড়ানো হয়েছে, সেভাবেই যেন প্রকাশ্যে রাস্তায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ওই যুবকদের। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া এ খবর জানিয়েছে।
অভিযুক্ত যুবকরা হলো মোহাম্মদ আরিফ, জোল্লু শিবা, জোল্লু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু।
গতকাল শনিবার তেলেঙ্গানার শাদনগরের ম্যাজিস্ট্রেট ওই চার যুবককে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছেন। তবে নিহত তরুণীর পরিবারের আক্ষেপ, পুলিশ যদি দ্রুত পদক্ষেপ নিত, তাহলে বাঁচানো যেত ওই তরুণীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় টোল প্লাজায় প্রিয়াঙ্কাকে স্কুটি নিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে ছক কষে অভিযুক্ত যুবকরা। পরে প্রিয়াঙ্কার অনুপস্থিতিতে স্কুটির টায়ার পাংচার করে দেয় তারা। পরে প্রিয়াঙ্কা ফিরে এলে স্কুটি ঠিক করে দেওয়ার নাম করে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় ট্রাকচালক আরিফ ও তার সহকারী শিবা। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করে ওই যুবকরা। জানা গেছে, পানীয়তে মদ মিশিয়ে জোর করে তাঁকে পান করানো হয়। পরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। দেহ পোড়াতে তাঁর স্কুটির জ্বালানি ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে।
প্রিয়াঙ্কার মায়ের দাবি, বিপদের আভাস পেয়ে প্রিয়াঙ্কার ছোট বোন তোন্ডাপাল্লি টোল প্লাজায় পৌঁছে খোঁজ করেছিলেন। না পেয়ে মা-বাবাকে জানালে তাঁরা থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। প্রিয়াঙ্কার মা বলেন, ‘আমার ছোট মেয়ে প্রথমে আরজিআইএ পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু আরজিআইএ পুলিশ বলে, সেটি শামসাবাদ থানার ঘটনা।’ প্রিয়াঙ্কার বোনের অভিযোগ, এক থানা থেকে আরেক থানায় ঘোরাঘুরি করতেই দুই থেকে তিন ঘণ্টা চলে যায়। যখন তল্লাশি শুরু হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। যদিও সাইবরাবাদের পুলিশ কমিশনার সজ্জানারের দাবি, আরজিআইএতে অভিযোগ জানাতেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এমন নৃশংস একটি ধর্ষণ ও খুনের মামলা ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে গেল না কেন? শোনা যাচ্ছে, মহাবুবনগরের যে ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে মামলাটি ওঠার কথা ছিল, সেখানে বিচারক ছিলেন না। ফলে শাদনগর থানাতেই ম্যাজিস্ট্রেটকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ শোনাতে হয়। তবে সেখানেও বড়সড় গোলমাল সামলাতে হয়েছে প্রশাসনকে। থানার বাইরে বিক্ষোভ করে শত শত মানুষ। তাদের দাবি, জনগণের হাতে তুলে দেওয়া হোক অভিযুক্ত ওই যুবকদের। পরিস্থিতি সামলাতে লাঠি চালায় পুলিশ।
অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে মিছিল হয়েছে তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যেও। শাদনগর বার অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, অভিযুক্তদের হয়ে মামলা লড়বে না তারা। এদিকে টুইটারে বিভিন্ন তারকাও প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন।