Skip to main content
NTV Online

ভ্রমণ

ভ্রমণ
  • অ ফ A
  • ট্রাভেলগ
  • কোথায়, কীভাবে
  • দর্শনীয় স্থান
  • টিপস
  • অন্যান্য
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
  • বাংলাদেশ
  • বিশ্ব
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • অর্থনীতি
  • শিক্ষা
  • মত-দ্বিমত
  • শিল্প ও সাহিত্য
  • জীবনধারা
  • স্বাস্থ্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • ভ্রমণ
  • ধর্ম ও জীবন
  • নির্বাচন
  • সহজ ইংরেজি
  • প্রিয় প্রবাসী
  • আইন-কানুন
  • চাকরি চাই
  • অটোমোবাইল
  • হাস্যরস
  • শিশু-কিশোর
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • English Version
  • এনটিভি বাজার
  • এনটিভি কানেক্ট
  • যোগাযোগ
  • English Version
  • এনটিভি ইউরোপ
  • এনটিভি অস্ট্রেলিয়া
  • এনটিভি ইউএই
  • এনটিভি মালয়েশিয়া
  • এনটিভি কানেক্ট
  • ভিডিও
  • ছবি
  • এনটিভির অনুষ্ঠান
  • বিজ্ঞাপন
  • আর্কাইভ
  • কুইজ
Follow
  • ভ্রমণ
  • কোথায়, কীভাবে
ছবি

মায়াবী চোখে কেয়া পায়েল

প্যারিসে রোমান্টিক মুডে মেহজাবীন-আদনান

দেশে দেশে ঈদুল আজহা উদযাপন

‘কনকা সেরা পরিবার’ সিজন- ৩ চ্যাম্পিয়ন ঢাকার শাহিদিন-ফারহানা পরিবার

কোহলির স্বপ্নজয়ে সারথি আনুশকা!

প্রকৃতিপ্রেমী বুবলী

ইউরোপের রাজাদের বিজয় উদযাপন

স্মার্ট লুকে কেয়া পায়েল

বর্ণিল আয়োজনে ‘মার্সেল হা-শো’ গ্র্যান্ড ফিনাল

জাপানে প্রধান উপদেষ্টা

ভিডিও
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
এ লগন গান শোনাবার : পর্ব ২০৫
জোনাকির আলো : পর্ব ১২৪
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪০
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪০
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
কনকা সেরা পরিবার, সিজন ০৩, গ্র্যান্ড ফিনালে
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
যাযাবর পলাশ
১৮:১০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
আপডেট: ১৯:৪০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
যাযাবর পলাশ
১৮:১০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
আপডেট: ১৯:৪০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
আরও খবর
বীরের মতো দেখে, চোরের মতো ফেরা
মনের মধ্যে থাইক্ষ্যং পাড়া
নামেই বুড়া, রূপে জোয়ান ঝর্ণা
সাপ-জোঁকের আতঙ্ক কাটিয়ে ‘বুড়ি’ ঝর্ণার কোলে
ঝর্ণা দেখতে গিয়ে শামিল হলাম নবান্ন উৎসবে
পর্ব-৬

মৃত্যুপুরী থেকে চোখে সেঁটে থাকা ডাবল ফলস

যাযাবর পলাশ
১৮:১০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
আপডেট: ১৯:৪০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
যাযাবর পলাশ
১৮:১০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
আপডেট: ১৯:৪০, ২৮ অক্টোবর ২০২১
চোখ জুড়ানো ডাবল ফলসের সামনে আমরা। ছবি : গাইড

পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সৌন্দর্য। আরও বেশি সৌন্দর্য, পাহাড়ের পেটে ঝরা ঝর্ণায়। যা চোখ ধাঁধানো, মন জুড়ানো। এ পথের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঘুরে বেড়িয়েছি পুরো পাঁচ দিন। হেঁটেছি বান্দরবানের থানচি থেকে রুমা উপজেলার দুর্গম সব পাহাড়ে। দেখেছি, ছয়টি ঝর্ণার মায়াবী রূপ। চূড়ায় বসবাস করা পাহাড়িদের জীবনাচরণ দেখেছি, শুনেছি তাদের টিকে থাকার গল্প।

তবে পাহাড়ি এ পথ অনেক কঠিন। যদিও তার চেয়ে বেশি নান্দনিক। জীবনের ভয়ংকর ও রোমাঞ্চকর সময়গুলো নিয়ে এ লেখা। আজ থাকছে যার ষষ্ঠ পর্ব। চলুন, পাহাড় অভিযানের তৃতীয় দিন রোববার রাত থেকে সোমবার দুপুর পর্যন্ত হেঁটে আসি।

সারা দিন এত বেশি পাহাড়ি পথে হেঁটেছি, পা ফুলে গেছে; প্রচণ্ড ব্যথা। নাড়াতেও কষ্ট হচ্ছে। পায়ে জোঁকের কামড়ের দাগ। রাত ৮টায় থাইক্ষ্যং পাড়ায় পৌঁছেছি। এখন পাড়ার পানির কলে গোসল করতে হবে। কিন্তু, সেখানে হেঁটে যাওয়ার শক্তি নেই। তবু গোসল সেরে নিই।

গোসল শেষে স্থানীয় গাইডের পাহাড়ি কাঠের ঘরে ঢুকি, বিছানায় বসি। পরে শরীর মেলে শুয়ে পড়ি। মাথা ব্যথা করছে। শরীরজুড়ে ক্লান্তির ছাপ। রাত সাড়ে ৮টা, আমাদের মূল গাইড রান্নার আয়োজন শুরু করেছেন। খাবার প্রস্তুত হয়, আমরা খেয়ে নিই।

খাওয়া শেষে রনী ভাই ওষুধ খাওয়ার কথা মনে করালেন। একটি নাপা আর দুটো ব্যথার ওষুধ খেলাম। এরই মধ্যে গাইড দ্রুত ঘুমাতে বললেন। জানালেন, সোমবার সকাল ৬টার আগে রওনা দিতে হবে। উদ্দেশ্য, ডাবল ফলস। এটি একটি ঝর্ণার নাম। সেখান থেকে ফিরে জাদিপাই ঝর্ণায় যেতে হবে।

কিন্তু, ঘুমাতে যাওয়ার সময় পায়ের ব্যথা যেন আরও বেড়ে গেল। পা জ্বলছে। রুবেল ভাই পা মালিশ করে দিলেন। সবার একই অবস্থা। কিছুক্ষণ সবাই পাহাড়ে জমে থাকা গল্প বললেন। এরপর শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম, আজ সারা দিন এত বেশি হেঁটেছি, যা আগে হাঁটেনি। নতুন অভিজ্ঞতা। প্রচণ্ড ধকল গেছে শরীরের ওপর দিয়ে।

সেই ভোরে বান্দরবানের রুমা উপজেলার রেমাক্রী প্রাংসা ইউনিয়নের সালৌপি পাড়া থেকে রওনা দিই। সকালে একের পর এক পাহাড় টপকে থিংদুলতে পাড়ায় পৌঁছাই। সেখানে সকালের নাস্তা সেরে পরপর তিনটি ঝর্ণা দেখে পুনরায় থিংদুলতে পাড়ায় ফিরি। ওই পাড়া থেকে বিকেলে রওনা দিয়ে রাত ৮টায় থাইক্ষ্যং পাড়ায় পৌঁছাই। ভোর থেকে রাত, এ হাঁটা পথের দূরত্ব অনেক।

ভয়ংকর ভয়ংকর সব পাহাড়ি পথ অতিক্রম করেছি সারা দিন। সাপ-জোঁকের আতঙ্ক কাটিয়ে তারপি, তারতেসহ তিনটি ঝর্ণা দেখেছি। এত সময়ের পাহাড়ি পথে শরীর অনেকবার বিশ্রাম চেয়েছে, দিইনি। দিইনি মানে, বিশ্রামের সুযোগ ছিল না। দ্রুত গতিতে চমকে ওঠা একেকটি পাহাড় অতিক্রম করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে এ শরীরের অবস্থা, ভীষণ ক্লান্ত। এসব ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত শরীর কখন ঘুমিয়ে পড়েছে; বুঝতে পারিনি। অপেক্ষা, ঘুম থেকে দ্রুত ওঠার।

সোমবার, ভোর ৫টা। আমরা ঘুমে বিভোর। গাইডের হাঁকডাক। ডিম-সবজিখিচুড়ি খেয়ে দ্রুত বের হতে হবে। খাওয়া শেষে সকাল ৬টায় রওনা দিই ডাবল ফলসের পথে। গোছগাছ শেষ, আমরা উঁচু পাড়া থেকে রওনা দিয়ে নিচে নামা শুরু করেছি।

গল্পে-স্বল্পে আমরা হেঁটে চলেছি। শাকিল ভাইয়ের হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে। দু-কদম হাঁটেন, আবার কুজু হয়ে হাঁটুতে হাত রাখেন। গতকাল পায়ে আঘাত লেগেছে তাঁর। শাকিল চঞ্চল প্রকৃতির লোক। তিনি এ ঝর্ণাতে যাবেন-ই। পায়ের টিস্যু ছিড়ে গেছে মনে হওয়ার পরও যাঁর এত আগ্রহ, তাঁর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করা যায়। শাকিলকে সঙ্গে নেওয়ার মনোভাবে আমরা ধীরে হেঁটে চলেছি।

রনী ভাইয়ের শরীর এখন ভালো। বেশ ফুরফুরে। এখন যে পথে হাঁটছি, তা রোববারের চেয়ে আরামদায়ক। কিন্তু, সামনে কঠিন পথ ডাকছে। ঢাকা থেকে রওনা দেওয়ার সময় রনী ভাই জানিয়েছিলেন, তাঁর এ যাত্রার মূল উদ্দেশ্য; ডাবল ফলস ও লুং ফির ভা ঝর্ণা দেখা। ফলে, তিনিও ডাবল ফলসে যাবেন। অন্যদের শারীরিক অবস্থা প্রায় একই। তবু, এ ঝর্ণায় যেতে চান সবাই।

এভাবে নিচে নামতে নামতে একটি ঝিরির দেখা। সেখান থেকে গলা ভিজিয়ে মিনিট পাঁচেকের বিশ্রাম। শক্তি সঞ্চয়ের জন্য খেজুর ও আমস্বত্ত্ব খাচ্ছি৷ আমরা পাথুরে ঝিরি ও কাদা মাড়িয়ে চলতে থাকি। পায়ে তাকিয়ে দেখি, বরাবরের মতো জোঁক লেগে আছে।

দূর থেকে ঝর্ণার শাঁ শাঁ শব্দ কানে বেজে চলেছে। মন দুলানো আওয়াজ। কিছুক্ষণ হেঁটে আমরা ডাবল ফলসের ঠিক মাথায় দাঁড়িয়েছি। দেখা যাচ্ছে, ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত প্রায় শতভাগ খাড়া পাথুরে পাহাড়। পাহাড় থেকে দুভাগে বিভক্ত হওয়া ঝর্ণাধারা নিচে নামছে। অসাধারণ দৃশ্য, উপভোগ্য।

ডাবল ফলস ‘ত্লাবং’ ঝর্ণা নামেও পরিচিত। এটি বম শব্দ। অর্থ, পানি ধরার বেসিন বা গর্ত। ঝর্ণার পানি নিচে পড়ে তৈরি হওয়া কূপের কারণে এ নামে ডাকা হয়। অন্য ঝর্ণার সঙ্গে ত্লাবংয়ের মৌলিক পার্থক্য, এখানে দুই দিক থেকে পানি এসেছে। প্রাংসা ও পাংখিয়াং নামের দুটি ঝিরি থেকে দুমুখী ঝর্ণাধারার সৃষ্টি হয়েছে। প্রবল গতিতে দুই ধারা নিচে ঝরছে।

ডাবল ফলসের ঝিরিতে গ্রীষ্ম, বর্ষা কিংবা শীত; সব সময় পানির দেখা পাওয়া যায়। এ ঝর্ণা থেকে পাথুরে রেমাক্রী খালের উৎপত্তি। বমদের কাছে শুনেছি, অনেক বছর আগে মিজোরামের পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা মানুষ হত্যা করে এ ঝর্ণার ওপর থেকে নিচে ফেলে দিত। মিজোরাম উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি রাজ্য। লাশ ফেলে দেওয়ার ঘটনা না কি প্রায় ঘটত৷ ফলে, পাহাড়িদের কাছে এ জায়গাটির ভয়ংকর রূপ আজ ইতিহাস।

ঠিক যেখান থেকে মানুষ হত্যার পর সন্ত্রাসীরা নিচে ফেলে দিত, আমি এখন সেখানে দাঁড়িয়ে। এখান থেকে নিচে পড়লে নির্ঘাত মৃত্যু। চারিদিকে পাহাড় আর বন-জঙ্গলে ঘেরা। শুনশান নীরবতা। সুন্দর দৃশ্য, ভিডিও করা শুরু করেছি। এ সময় রুবেল ভাই বলে উঠলেন, ‘আপনি কি আমাদের জেল খাটাবেন? এখান থেকে পড়ে গেলে বাঁচবেন?’ সেখান থেকে সাবধানে সরে আসি।

সময় এখন সকাল সাড়ে ৭টা। ওপর থেকে মনে হচ্ছে, দু-পাঁচ মিনিট লাগবে ঝর্ণার নিচে নামতে। কিন্তু, ঘটনা তা নয়। গাইড জানালেন, সোজাসুজি নিচে নামার কোনো সুযোগ নেই। নিচে নামতে হলে আরেকটি খাড়া পাহাড় টপকাতে হবে। তারপর অন্যপথে নিচে নামতে হবে। পাহাড়ে উঠার সময় একটি ঝিরি সাবধানে পার হই। উঠছি, শরীর ক্লান্ত হচ্ছে; গলা শুকাচ্ছে, পানি খাচ্ছি। কখনো-সখনো এতটাই কষ্ট হচ্ছে, যেখানে-সেখানে হাত-পা মেলে বসে পড়তে ইচ্ছে করছে। কষ্ট হলেও হাঁটছি।

পাহাড়ের চূড়ায় ওঠার পর এবার নিচে নামার পালা। লতা-পাতা, গাছ-গাছড়া ধরে ধীরে ধীরে নিচে নামছি। দৃশ্যের লোভ সামলাতে না পেরে পুনরায় ভিডিও করছি, ছবি তুলছি। নিচে নামতে গিয়ে প্রথমেই হোঁচট খেলাম আমি। পড়ে যাওয়ার উপক্রম। ভয়ে মুঠোফোন ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেললাম। এর মধ্যে হঠাৎ বৃষ্টির বাগড়া। বৃষ্টি হলে সাধারণ পাহাড়ি পথ পিচ্ছিল হয়ে ওঠে। ফলে, হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।

শাকিল ভাই খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছেন। একবার কাদায় পা পিছলে যায়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান তিনি। হাঁটায় আমরা খুবই সাবধানী। আমার পা আবার পিছলে গেল। ভাগ্যিস সামনে একটি গাছ ছিল! লাঠিতে ভর করে নিচে নামার চেষ্টা করছি, সরে যাচ্ছে। ফলে, বিপদের আশঙ্কা করে গাইড মাটিতে দায়ের কোপ বসাতে বসাতে নিচে নামছেন।

আমরা গাইডের কোপ দেওয়া স্থানে পা রেখে রেখে নিচে নামছি। যাতে পা সরে না যায় ও বিপদ ছাড়া এ পথ অতিক্রম করতে পারি। তবু ভয় ভয় করছে। সাধারণত পাহাড়ে উঠতে কষ্ট বেশি হলেও এখন নিচে নামতে বেশি কষ্ট হচ্ছে। কারণ, আমরা যে পথে নামছি, পথটি খাড়া। পিচ্ছিলও বটে। ভেবেচিন্তে পা ফেলতে হচ্ছে। পিছলে গেলে বিপদ।

ঝুঁকিপূর্ণ এ পথ পেরিয়ে এখন আমরা ঝর্ণার ঠিক সামনে। দাঁড়িয়ে আছি আমি, গাইড, প্রিন্স, শাকিল, কামাল, সানজিদ, রুবেল ও রনী ভাই। ঘড়ি দেখছি আর ভাবছি, ঝর্ণার ঠিক ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত নামতে সময় লেগেছে পাকা ৩০ মিনিট। সময় এখন সকাল ৮টা। দাঁড়িয়ে ঝর্ণার দু-ধারার সৌন্দর্য দেখছি। আহ, চোখে সেঁটে যাওয়ার মতো দৃশ্য। এত সুন্দর ঝর্ণা আমাদের দেশেও আছে!

দাঁড়িয়ে আছি, শাঁ শাঁ আওয়াজে ঝর্ণা ডেকে চলেছে। এতে উৎফুল্ল হয়ে ওঠা মন আনমনে বলে বসে, এ পর্যন্ত আসতে শরীরকে যতটা কষ্ট দিয়েছি; ঝর্ণার সৌন্দর্যে দেহ তারও বেশি মেতে উঠেছে। এক শীতল অনুভূতি খেলা করছে মনজুড়ে। চোখে শান্তির পরশ। এবার মুঠোফোনে চোখ রেখে দৃশ্য দেখছি। বর্ণনা করছি। অদ্ভুত সুন্দর, মায়াবী।

আশপাশ থেকে আসা অজস্র রকমের পোকামাকড়ের কিচিরমিচির আর ঝর্ণার শব্দে অন্যরকম এক আবহ তৈরি হয়েছে। এ পর্যন্ত যত পাহাড়ি পথে হেঁটেছি, সব পথেই বাহারি রকম পোকামাকড়ের কিচিরমিচির শোনা গেছে। সেটা হোক দিনে কিংবা রাতে। এ কিচিরমিচির শুনতে কখনো মধুর, কখনো গা শিউরে ওঠার মতো। এ আবহ পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য।

আবার হালকা বৃষ্টির শুরু। বৃষ্টিতে ঝর্ণার রূপ পরিবর্তন হয়ে আরও মায়াবী হয়ে উঠে। দাঁড়িয়ে আছি। আর দেরি নয়, একে একে সাতজন ঝর্ণার সামনের পানিতে নেমে পড়েছি। লাফালাফি-দাপাদাপি করছি। একেকভাবে সবাই সবার ছবি তুলে দিচ্ছি। ঝর্ণার পানি যেখানে পড়ছে, সেখানে অনেক বড় গর্ত। পাথরে মোড়ানো গর্ত।

ডাকলাম, কেউ গর্তের ওখানে যেতে চাচ্ছেন না। সাপের ব্যাপারে আগে থেকেই আমরা সতর্ক। মনে পড়ে গেল, বুড়া ঝর্ণার কথা। গর্তে সাপ থাকার কারণে আমাকে নামতে দেননি গাইড। কিন্তু, এবার সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত। মানা করলেও গর্তে ডুব দেব, না করলেও দেব। এক সহযাত্রীকে পুনরায় ডাকলাম। তিনি ঝর্ণার কূপে নামবেন না।

একাই সাঁতরে ঝর্ণা ধারার কাছাকাছি গেলাম, পাথরের ওপর বসলাম। তারপর কূপে একের পর এক ডুব দেওয়া শুরু। এ সময় এত বেশি রোমাঞ্চিত ছিলাম যে, মাথায় থাকা চশমাটি কখন পড়ে গেছে; জানিই না। চশমাটি একজন উপহার দিয়েছিলেন। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে নিজ পকেটের টাকা দিয়ে খরিদ করা হয়েছিল চশমাটি। কারণ, উপহার প্রদানকারী তখন পাশে ছিলেন না। চশমা রেখে কূপে নামব, এ খেয়ালও ছিল না।

কূপে ডুব দিয়েই চলেছি। যেন শরীর ডুবিয়ে মন ভেজাচ্ছি। হঠাৎ একটি ব্যাঙের ডাক কানে বাজল। দৃষ্টি ঘুরালাম, এত বড় ব্যাঙ আমি আগে দেখিনি। কূপের পাথরগুলো কালো রঙের। কূপ থেকে তৃপ্ত মন নিয়ে আবার ঝর্ণার সামনে এসে দাঁড়িয়েছি। আহ, শরীর যেন পেখম মেলেছে। আনন্দে সবাই ছবি তুলছেন। আবার ভিডিও করা শুরু করেছি, ফ্রেমে রনী ভাই।

রনী ভাইয়ের উল্লাস দেখার মতো। ঝর্ণা মাখছেন। ভিডিও শেষ হলে ছবিও তুলছি। ভাইও এদিক-ওদিক ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর এবার ঝর্ণার ঝিরিতে আসন গেড়ে বসলাম। দেখছি, ঝর্ণা সেজেছে তার নৈস্বর্গিক সাজে! আমরা পুলকিত, আনন্দিত। এভাবে ডাবল ফলসের সৌন্দর্যে আমরা মুগ্ধ থেকেছি এক ঘণ্টারও বেশি সময়।

এবার থাইক্ষ্যং পাড়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পালা। যদিও মনে হচ্ছে, এখানে আরো কিছুক্ষণ কাটিয়ে যাই। কিন্তু, যেতে তো হবেই। জাদিপাই ঝর্ণার দূরত্ব অনেক। টানা কয়েক ঘণ্টা হাঁটতে হবে। ফলে, ঝর্ণা ছেড়ে একে একে সবাই পাহাড়ে ওঠা শুরু করেছি। বৃষ্টিতে পিচ্ছিল হওয়া পথ বেয়ে হাঁটছি।

পাহাড়ের ওপর উঠতে উঠতে এখন আমরা ডাবল ফলসের ঠিক সেই চূড়ায়। একটু দাঁড়িয়ে আবার এখান থেকে নিচে নামা শুরু করেছি। নামতে নামতে রুবেল ভাইয়ের কাছে জানতে চাইলাম, কেমন লাগল আপনার? ভাই জানালেন, ‘আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া, আমরা এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি। ফিরেও যাচ্ছি ভালোভাবে।’ হাসতে হাসতে বললেন, ‘কেস খতম, পয়সা হজম!’

আমরা এবার ঝিরি পার হয়ে একটু ভিন্ন পথে হেঁটে চলেছি। শুরুতে একটা পাহাড়ে উঠে হাঁটা শুরু করেছি। চারপাশে জুমের পাকা ধানক্ষেত। হলুদ-সবুজে মোড়ানো সেই ক্ষেতের চিকন পথ দিয়ে হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে আবার নেমে পড়ি ঝিরিপথে। ঝিরি পার হয়ে এবার উঁচু পাহাড়ে ওঠা শুরু করি। হাঁটতে হাঁটতে বেলা ১১টার দিকে থাইক্ষ্যং পাড়ায় পৌঁছাই। পাড়াটি অসম্ভব সুন্দর। ভীষণ পরিপাটি। পাড়ার রাস্তাগুলোও খুবই চকচকে। যেন কোথাও ময়লা নেই।

পাড়ায় পৌঁছে কাঠের ঘরে ঢুকেছি মাত্র। ব্যাগ রাখতে রাখতে গাইড জানালেন, এখনি জাদিপাই ঝর্ণার উদ্দেশে রওনা দিতে হবে। কিন্তু, এ পাড়ায় অন্তত দু-রাত কাটানোর চিন্তা আমার। চিন্তা, স্থানীয়দের সঙ্গে সময় দেওয়ার; তাদের টিকে থাকার গল্প শোনার। শুধু তাই নয়, তাদের জীবনাচরণ থেকে জীবনবোধ; এসব কাছ থেকে দেখা বা বোঝার আগ্রহ আমার।

ফলে, আমি জাদিপাই ঝর্ণায় যাব না; তা জানিয়ে দিলাম। রনী ভাইও যাবেন না, তাঁর এ সিদ্ধান্ত আরো আগের। এবার আমাদের সঙ্গে যোগ দিলেন শাকিল ও রুবেল ভাই। তাঁরাও যাবেন না বলে জানালেন। আমরা কাল (মঙ্গলবার) সকালে বাকত্লাই ঝর্ণা দেখে রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেব। কিন্তু, আজকের এ রাত আমরা থাইক্ষ্যং পাড়ার গল্পে-স্বল্পে কাটিয়ে দেব।

কামাল, আরিফ ও সানজিদ ভাইকে নিয়ে গাইড রওনা দিলেন জাদিপাই ঝর্ণার উদ্দেশে। আমরা সামান্য পানি দিয়ে হালকা গা পরিষ্কার করি। দুপুরে খাবার খেয়ে হারিয়ে যাই ঘুমের রাজ্যে। আহ, চারদিন পর এই প্রথম ইচ্ছেমতো বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ হলো আমাদের। এখন অপেক্ষা ঘুম থেকে ওঠার। অপেক্ষা, বিকেল থেকে পাহাড়ি পাড়ার গল্পে মেতে ওঠার।

থানচি-রুমার গহিনে

সংশ্লিষ্ট সংবাদ: থানচি-রুমার গহিনে

০৭ নভেম্বর ২০২১
বীরের মতো দেখে, চোরের মতো ফেরা
০৪ নভেম্বর ২০২১
মনের মধ্যে থাইক্ষ্যং পাড়া
২২ অক্টোবর ২০২১
নামেই বুড়া, রূপে জোয়ান ঝর্ণা
  • আরও

পাঠকের পছন্দ

গরমে ঘামাচিতে জেরবার?

ভ্রমণের সময় যা মনে রাখবেন

কীভাবে হবেন ভালো সহকর্মী?

সর্বাধিক পঠিত
  1. বড় বিপর্যয়ে হাউজফুল-৫, শুক্রবার বক্স অফিসে সর্বনিম্ন আয়
  2. ‘আমি আমার শরীরকে ভীষণ ভালবাসি’
  3. বিমান দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা
  4. বিবাহিত জীবনে সফল না-ই হতে পারি, বিচ্ছেদে কিন্তু সফল : আমির খান
  5. বক্স অফিস : ৪ দিনে ১৬০ কোটির ঘরে ‘হাউসফুল ৫’
  6. মুখের বিমা করলেন করণ জোহর?
সর্বাধিক পঠিত

বড় বিপর্যয়ে হাউজফুল-৫, শুক্রবার বক্স অফিসে সর্বনিম্ন আয়

‘আমি আমার শরীরকে ভীষণ ভালবাসি’

বিমান দুর্ঘটনায় প্রিয়জন হারিয়েছেন ‘টুয়েলভথ ফেল’ অভিনেতা

বিবাহিত জীবনে সফল না-ই হতে পারি, বিচ্ছেদে কিন্তু সফল : আমির খান

বক্স অফিস : ৪ দিনে ১৬০ কোটির ঘরে ‘হাউসফুল ৫’

ভিডিও
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
মহিলাঙ্গন : পর্ব ৩৬১
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
গানের বাজার, পর্ব ২৩৫
রাতের আড্ডা : পর্ব ০৭
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
এক্সপার্ট টুডেস কিচেন : পর্ব ৩০১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
কোরআন অন্বেষা : পর্ব ১৮১
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
টেলিফিল্ম : প্রিয় অভিভাবক
ফাউল জামাই : পর্ব ১০১
ফাউল জামাই : পর্ব ১০১
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৭
আলোকপাত : পর্ব ৭৭৭
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫৩
সংলাপ প্রতিদিন : পর্ব ২৫৩
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪০
স্বাস্থ্য প্রতিদিন : পর্ব ৫৫৪০

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Alhaj Mohammad Mosaddak Ali

Chairman

NTV Online, BSEC Building (Level-8), 102 Kazi Nazrul Islam Avenue, Karwan Bazar, Dhaka-1215 Telephone: +880255012281 up to 5, Fax: +880255012286 up to 7

Browse by Category

  • About NTV
  • Career
  • NTV Programmes
  • Advertisement
  • Web Mail
  • NTV FTP
  • Satellite Downlink
  • Europe Subscription
  • USA Subscription
  • Privacy Policy
  • Terms & Conditions
  • Contact
  • Archive

NTV Prime Android App

Find out more about our NTV: Latest Bangla News, Infotainment, Online & Live TV

Qries

Reproduction of any content, news or article published on this website is strictly prohibited. All rights reserved

x