এআই নির্মিত সিনেমার প্রতি বাড়তি আগ্রহ

ইউয়েন ছ্য পরিচালিত ‘হোয়াট'স নেক্সট?' সিনেমাটি পুরোপুরি এআই নির্মিত। আগে সিনেমা তৈরির বাজেট পেতে হিমশিম খেতেন তিনি। এখন এআই-এর কল্যাণে অল্প খরচেই সিনেমা বানাতে পারছেন। চীনের তরুণ পরিচালক ইউয়েন ছ্য একটি সিনেমা তৈরি করেছেন। আর এটা হয়ত অতীতে আপনি যেসব সিনেমা দেখেছেন তার চেয়ে ভিন্ন। সিনেমাটির নাম - হোয়াট'স নেক্সট?
চলচ্চিত্র পরিচালক ইউয়েন ছ্য অতীতে সাত বছর অন্য সিনেমা নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু অর্থসংকটের কারণে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহারে আগ্রহী হন তিনি। ‘হোয়াট'স নেক্সটে?' সিনেমায় কোনো ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়নি। তার বদলে রানওয়ে নামের একটি এআই-নির্ভর সফটওয়্যারে সুনির্দিষ্ট প্রম্পট ব্যবহার করেছেন তিনি।
হোয়াট'স নেক্সট?-এর পরিচালক ইউয়েন ছ্য বলেন, ‘জাদুকরি ব্যাপার হচ্ছে আমার আগে থেকে তৈরি কোনো আউটলাইন বা স্ক্রিপ্ট ছিল না। যখন এটি শুরু করি তখন মাথা থেকে আউটলাইন বের করি। আমি এআই-জেনারেটরকে একটার পর একটা অর্ডার দিয়েছি। আমি বিশ হাজারের বেশি ছোট ভিডিও পেয়েছি এবং সেগুলো একত্র করেছি। ছয় রাত ঘুমাইনি।’
এআই দিয়ে তৈরি প্রথম সিনেমাগুলো বিভিন্ন দৃশ্য সম্পর্কে ধারণা দিয়েছে। পরবর্তীতে প্রম্পট লিখে এবং তাতে পরিবর্তন এনে ইউয়েন ছ্য যা চেয়েছেন, তা তৈরি করেছেন।
তার সিনেমার কোনো শিল্পী বা স্ক্রিপ্ট নেই। এতে দেখানো হয়েছে কীভাবে মানুষের লোভ পৃথিবী ধ্বংস করছে। শিকলবন্দি নারী লিঙ্গ বৈষম্যের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং পৈশাচিক মূর্তি, টাকার বিকৃত চিত্র এবং ধনীদের মধ্যে বৈঠক পুঁজিবাদের প্রতীক।
এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সর্বনাশের চিত্রও রয়েছে। সিনেমাটির সৃজনশীলতার কৃতিত্ব আসলে কার? ইউয়েনের নাকি এআই-এর? ইউয়েন মনে করেন, গল্প বলাটা মানুষের দক্ষতা।
ইউয়েন ছ্য বলেন, ‘‘চলচ্চিত্র নির্মাণে গল্পটা সবসময় প্রাধান্য পায়৷ গল্প হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং মৌলিক বিষয়। এআই একটি প্রযুক্তিমাত্র। এবং এটাকেও আমি সাসপেন্স, রোমান্স এবং অন্যগুলোর মতো চলচ্চিত্রের একটা ধরণ মনে করে।’
যেখানে কিছু চলচ্চিত্র বানাতে কোটি টাকা খরচ হয়, ইউয়েন জানিয়েছেন যে ‘হোয়াট'স নেক্সট’ তৈরিতে লেগেছে শুধু তার কম্পিউটার এবং এক সপ্তাহ সময়।
ইউয়েন ছ্য বলেন, ‘একজন নতুন পরিচালকের বিনিয়োগ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। এটা আমাকে আমার মতামত বিশ্বের কাছে তুলে ধরার একটা সুযোগ দেবে এবং এতে করে আমি অন্যদের চোখেও পড়তে পারি।’
বার্লিনালেতে ‘হোয়াট'স নেক্সট?’-এর কয়েকটি প্রদর্শনীর সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। দর্শকদের মাঝে বিশেষ আগ্রহ তৈরি করা চলচ্চিত্রটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।