ব্রাজিলে স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ স্কুলে স্মার্টফোন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করে তার ফলাফল পরীক্ষা করে দেখছে- যেমন নিউজিল্যান্ড, চীন ও ইটালি। এবার ব্রাজিলও এতে যোগ দিয়েছে। এর ফলে পড়াশোনায় শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বেড়েছে বলে দাবি অনেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর। তবে এই নিয়মের সমালোচনাও করছেন অনেকে। এতে করে শিক্ষার্থীরা মিডিয়ার ব্যবহার সম্পর্কে শিখতে পারছে না বলেও মনে করছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ।
পড়াশোনায় মনোযোগ বেড়েছে উল্লেখ করে দেশটির শিক্ষার্থী মারিয়া জুলিয়া মাসেডো বলছে, ‘আমি এখন আরো বেশি মনোযোগী থাকি। আগে মোবাইলে কোনো বার্তা এলো কিনা তা নিয়ে বেশি ভাবতাম। সবসময় ফোন দেখতে চাইতাম। আর এখন আমি শুধু পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারি। আমার এটা ভালো লাগছে, আর লেখাপড়া ভালোই চলছে।'
জরুরি পরিস্থিতিতে এবং লেখাপড়ার জন্য দরকার হলে শিক্ষার্থী এখনো ফোন ব্যবহার করতে পারে। ব্রাজিল সরকার আশা করছে, নতুন আইনের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগ আরও বাড়বে। এ ছাড়া তাদের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী হবে। শিক্ষার্থীরা বাস্তব জীবনে একে অপরের সঙ্গে আরো বেশি যোগাযোগ করতে উৎসাহিত হবে বলেও মনে করছে সরকার।
রিও ব্র্যাঙ্কো স্কুলের প্রধান শিক্ষক এস্থার কারভালিয়ো জানান, ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুখোমুখি যোগাযোগ বেড়েছে, যা স্ক্রিন আর ফোনের কারণে অনেকখানি কমে গিয়েছিল। বাচ্চারা সবসময় ফোন নিয়ে থাকতো। কতটা সময় তারা ফোনে ব্যয় করছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হচ্ছিল। আমরা প্রাপ্তবয়স্করাই স্ক্রিন টাইম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, তাহলে কীভাবে আমরা বাচ্চাদের কাছ থেকে সেটা আশা করতে পারি?'
সমালোচকেরা বলছেন, স্কুলে মোবাইল ব্যবহার করতে না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা মিডিয়ার ব্যবহার সম্পর্কে শিখতে পারছে না। এ ছাড়া এভাবে আসলে শিক্ষার্থীদের বাধ্য করা যায় না বলেও মনে করছেন তারা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বয়সে বড় শিক্ষার্থীরা নতুন নিয়ম পছন্দ করছে না। তাদের প্রশ্ন, কেন বিরতির সময় তাদের ফোন পরীক্ষা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
রাফায়েল টেইশেইরা নামের এক শিক্ষার্থী বলছে, ‘আমার গ্রেড আর ক্লাসে আমার পারফরম্যান্স ভালো হয়েছে। কিন্তু এর একটা খারাপ দিকও আছে, কারণ, সত্য হলো এটা কারও সঙ্গে যোগাযোগ অনেক কঠিন করে তোলে। আজকাল প্রায় সবকিছুই ফোন দিয়ে হয়। স্কুল ছাড়ার পর প্রথমেই আমি যা করি তা হলো ফোন চেক করা। এটা প্রায় একটা প্রয়োজনীয়তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।