রাবির শিক্ষক নিয়োগে জামায়াতের সাবেক এমপির সুপারিশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খানের ফেসবুক স্টোরিতে শিক্ষক নিয়োগের এক আবেদনকারীর প্রবেশপত্র প্রকাশিত হওয়ার ঘটনায় শুরু হয়েছে সমালোচনা ও তুমুল বিতর্ক। ফাঁস হওয়া ওই প্রবেশপত্রে জামায়াতপন্থী এক সাবেক সংসদ সদস্যের সুপারিশনামা দেখা যাওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
শনিবার (২ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্টোরির ছবিটি ছড়িয়ে পড়ে। প্রবেশপত্রে দেখা যায়, সুপারিশকারী হিসেবে উল্লেখ আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. লতিফুর রহমানের নাম, যিনি তৃতীয় ও পঞ্চম জাতীয় সংসদে জামায়াতে ইসলামীর এমপি ছিলেন। জানা গেছে, তিনি রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি এবং জেলা জামায়াতের সাবেক নায়েবে আমির।
ঘটনার পর ব্যক্তিগত ফেসবুক ওয়ালে ব্যাখ্যামূলক একটি পোস্ট দেন উপ-উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন খান। তিনি জানান, ‘কীভাবে ওই প্রবেশপত্রটি তার স্টোরিতে আপলোড হয়েছে, তা তিনি নিজেও জানেন না। তিনি ধারণা করেন, হয়তো তার ছেলে মোবাইলে গেম খেলতে গিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে স্টোরিতে পোস্টটি আপলোড করে ফেলেছে।
ব্যাখ্যায় ফরিদ উদ্দিন খান লেখেন, ‘প্রতিদিনই অনেক চাকরিপ্রার্থী বা তাদের আত্মীয়-স্বজন সিভি, প্রবেশপত্র ও সুপারিশ পাঠান। কেউ সরাসরি দেখা করে, কেউবা হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন।’
এ প্রসঙ্গে ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘রাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুয়া) নির্বাচনের সময় এক জামায়াতপন্থী সাবেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরে সেই সাবেক এমপি তার এলাকার এক চাকরিপ্রার্থীর জন্য প্রবেশপত্র পাঠিয়ে সুপারিশ করেন। আমার কাছে বর্তমানে এমন ডজনখানেক সিভি ও সুপারিশ জমা আছে, তবে এসব কোনোভাবেই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে না’ বলে দাবি করেন।

ফেসবুক স্টোরির ঘটনাটি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘আশা করি বিষয়টি নিয়ে কেউ ভুল বুঝবেন না। ভুলবশত স্টোরিটি আপলোড হয়েছে, এজন্য দুঃখপ্রকাশ করছি।’
তবে ঘটনাটি ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একজন উপ-উপাচার্যের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে একটি নিয়োগপ্রার্থীর গোপনীয় প্রবেশপত্র কীভাবে প্রকাশিত হলো। অনেকেই বলছেন, রাবিতে শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগে আগে থেকেই স্বজনপ্রীতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও অস্বচ্ছতার অভিযোগ রয়েছে। এই ‘সুপারিশ কাণ্ড’ সেই বিতর্ককে আবারও সামনে এনেছে।