কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ফি আছে, চিকিৎসা নেই

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ জেলার একটি সুপরিচিত ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে কলেজে চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও প্রতিবছর চিকিৎসা বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
কলেজ প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৮ হাজার। ভর্তির সময় একজন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা খাতে ২০ টাকা দিতে হয়। অর্থাৎ প্রতিবছর এই খাতে আদায় হয় প্রায় ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ বছরের ভর্তি রসিদেও চিকিৎসা বাবদ ২০ টাকা নেওয়ার উল্লেখ রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কলেজে কোনো চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র কিংবা প্রাথমিক চিকিৎসারও কোনো ব্যবস্থা নেই। অথচ বছরের পর বছর ধরে ‘চিকিৎসা ফি’ নেওয়া হলেও সেই টাকায় কোনো দৃশ্যমান সেবা চালু হয়নি।
নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, একজন শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পাওয়া জরুরি। আবার কলেজে নিয়মিত ক্লাস, টেস্ট ও ইনকোর্স পরীক্ষা তো চলছেই, পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়। এসব পরীক্ষায় অংশ নিতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা আসেন।
কলেজের চারটি আবাসিক হলেও প্রতিদিন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অবস্থান করেন। কিন্তু কোনো চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় তারা চরম অনিশ্চয়তায় থাকেন।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, আগে কুমিল্লা সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রতি সোমবার একজন মেডিকেল অফিসার কলেজের একটি নির্দিষ্ট কক্ষে বসতেন। কিন্তু বর্তমানে সেই সেবাটিও বন্ধ হয়ে গেছে। কী কারণে বন্ধ হয়েছে, সে বিষয়ে তাদের কিছু জানানো হয়নি।
তবে কত বছর ধরে চিকিৎসা খাতে কত টাকা আদায় করা হয়েছে, তা কলেজ প্রশাসন কখনও প্রকাশ করেনি। শিক্ষার্থীদের দাবি, অবিলম্বে পূর্বের অর্থের হিসাব প্রকাশ করতে হবে এবং চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
কলেজের একাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীও মনে করেন, পরীক্ষার সময় ও আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সেবা থাকা অত্যন্ত জরুরি।
এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আবুল বাসার ভূঁইয়া বলেন, আমাদের কলেজে খুব দ্রুত একটি মেডিকেল সেন্টার চালু করার পরিকল্পনা আছে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।