‘২৫টি বোয়িং কেনার বিষয় যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলে মনে হয়নি’

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য আলোচনার সময় মনে হয়নি যে যুক্তরাষ্ট্র ২৫টি বোয়িং কেনার ব্যাপারটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। একবারের জন্যও তারা এটিকে আলোচনায় আনেননি। আমার জানা মতে, বোয়িং গত বছর মাত্র ১২টি প্লেন বানিয়েছে। ফলে এই চুক্তি অনুযায়ী তারা বাংলাদেশকে প্রথম বিমান হয়তো সরবরাহ করতে পারবে ২০৩৭ সালে। এত দ্রুত সরবরাহের সক্ষমতা তাদের নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার গোলাম মোর্তোজাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাণিজ্য উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের পণ্য আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘পাল্টা শুল্ক’ ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে শেষ পর্যন্ত ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওয়াশিংটনে তৃতীয় দফার আলোচনার শেষ দিনে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছে। নতুন শুল্ক ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্তুতির জন্য আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে শেখ বশিরউদ্দিন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এটা ছিল যে বাংলাদেশ প্রায় ১৫-২০ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য বহির্বিশ্ব থেকে আমদানি করে। যুক্তরাষ্ট্র কৃষিপণ্যের একটি অন্যতম বৃহৎ দেশ। আমরা যদি প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে আমাদের কৃষিপণ্যের সংস্থান করতে পারি তাহলে আমরা আমাদের ভোক্তাদের যৌক্তিক মূল্যে পণ্য দিতে পারব। বাজার স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এটি সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারবে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যেরও প্রসার ঘটবে। মূলত, জ্বালানি পণ্য ও কৃষিপণ্যের ওপর নির্ভর করে আমরা চেষ্টা করেছি বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে।
তিনি আরও বলেন, বোয়িং তো আমাদের এমনিতেই আমদানি করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি করেছি। বৈশ্বিক বাজার থেকে খাদ্যপণ্য ২০ বিলিয়ন ডলার আমদানি করি। আমাদের ঘাটতি (যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে) ৬ বিলিয়ন ডলার। আমরা যদি এখানে ২ বিলিয়ন ডলারের আমদানি বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে একটা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সেটা তুলা হোক, সয়াবিন হোক, ভুট্টা হোক, গম হোক। এখানে বোয়িং খুব গুরুত্বপূর্ণ না। বোয়িং প্লেন তো আর আপনি প্রতিদিন কেনেন না।
বোয়িং প্লেন কি বাংলাদেশের কেনার দরকার ছিল— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিমানের যে পরিচালন সক্ষমতা ও ব্যবসায়িক অবস্থা, এই পরিস্থিতিতে আমাদের বিমানবন্দর দিয়ে গত বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ যাত্রী যাতায়াত করেছে। তার মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সম্ভবত লাখ বিশেক যাত্রী বহন করেছে। তার মানে আমাদের কোটি খানেক যাত্রীর বাজার রয়ে গেছে। কিন্তু প্রতিযোগিতা সক্ষমতা না থাকার কারণে সেটি বৃদ্ধি করতে পারছি না। সুতরাং ২৫টি বিমান ওই বিবেচনায় কিছুই না। আমাদের এর থেকে আরও বেশি কিছু দরকার।