দুধের ঘাটতি মোকাবিলায় সারা দেশে হবে চিলিং পয়েন্ট : ফরিদা আখতার

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, দেশে দুধের ঘাটতি মোকাবিলা ও কৃষকদের উৎপাদিত দুধ যথাযথ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে সারা দেশে চিলিং পয়েন্ট (চিলিং সেন্টার) স্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া কৃষকের উৎপাদিত দুধ সংগ্রহ করে শহরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে, যাতে দেশের বড় কোম্পানিগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমে আসে।’
রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) রংপুর শহরের আরডিআরএস বাংলাদেশ বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্পের (এলডিডিপি) ‘বিভাগীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা’য় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন। কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এলডিডিপি’র প্রধান কারিগরি সমন্বয়ক ড. মো. গোলাম রাব্বানী।
ফরিদা আখতার বলেন, গবাদিপশুর রোগ নিয়ন্ত্রণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রতিরোধযোগ্য রোগ নিয়ন্ত্রণে টিকাদানের কোনো বিকল্প নেই।
উপদেষ্টা বলেন, ‘গবাদিপশুর রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন উৎপাদন ও ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এটি কৃষকের জীবিকা ও জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।’
মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে পশুর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ওপরও নিয়ন্ত্রণ আরোপের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন ফরিদা আখতার।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, চরাঞ্চলে নারীদের জীবিকা গবাদিপশু পালনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। তাই চরাঞ্চলের উন্নয়নে প্রাণিসম্পদ খাতে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশে অধিকাংশ শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, শিশুদের বিদ্যালয়ে মধ্যাহ্নভোজে দুধের পাশাপাশি ডিম সরবরাহের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
উপস্থিত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে উপদেষ্টা গবাদিপশুর ওষুধ বিতরণের সময় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ যাচাইয়েরও নির্দেশ দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনে উৎসাহিত করতে হবে এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য অন্য কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব বলেন, ‘রংপুর বিভাগের উদ্বৃত্ত দুধ যদি প্রক্রিয়াজাত করে সারা দেশে বিতরণ করা যায়, তবে দুধের ঘাটতি কিছুটা হলেও কমবে।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, দেশে নতুনভাবে ছড়িয়ে পড়া ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ প্রতিরোধে স্থানীয়ভাবে একটি ভ্যাকসিন উদ্ভাবন করা হয়েছে।
আড়াই লাখ ডোজ ইতোমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও পাঁচ লাখ ডোজ প্রস্তুত হবে বলেও জানান ড. মো. আবু সুফিয়ান।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও জানান, জরুরি ভিত্তিতে সরকার বিদেশ থেকে ১২ লাখ ডোজ আমদানি করছে, যা সারা দেশে বিতরণ করা হবে।
এলডিডিপি প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জসিম উদ্দিন, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রংপুর বিভাগের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা, কৃষক ও সাংবাদিকরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।