রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে নতুন সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব এপিএইচআরের

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সাবেক ও বর্তমান আইনপ্রণেতাদের প্ল্যাটফর্ম আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এপিএইচআর) বাংলাদেশ, চীন ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোকে সম্পৃক্ত করে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রস্তাব করেছে।
আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এপিএইচআরের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তারা এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন।
সাক্ষাৎকালে এপিএইচআরের সহসভাপতি ও মালয়েশিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, ‘দুটি কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা উচিত। একটি হলো রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল গঠনে আসিয়ান নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টা। আরেকটি হলো রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আসিয়ান-বাংলাদেশ-চীন ত্রিপক্ষীয় উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক সম্মেলন।’
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আসিয়ানের সহযোগিতা চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশকে এই আঞ্চলিক সংগঠনের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার পুনরায় আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা আসিয়ানের খাতভিত্তিক সংলাপের সহযোগী হতে চাই। আমরা বারবার এ কথাই বলে আসছি। যেহেতু আমরা আসিয়ানের অংশ নই, তাই রোহিঙ্গা বিষয়টি আসিয়ানের আলোচনায় তুলতে পারছি না। অথচ এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সংকট সমাধান করা প্রয়োজন।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও আহ্বান জানান, এপিএইচআর যেন একটি আসিয়ান সংসদীয় গ্রুপ গঠন করে, যেখানে বাংলাদেশকে আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে যুক্ত করা যায়। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের জন্যও জরুরি, কারণ এই সমস্যা এখন আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আসিয়ানের একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুন, যা বর্তমানে নেই। আসিয়ানকে আমরা যে সংকটের মুখোমুখি হচ্ছি, তা বিশ্ব সম্প্রদায়কে জানাতে হবে।’
চার্লস সান্তিয়াগো বলেন, আসিয়ান সংসদ সদস্যরা ২০১৮ সালে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছিলেন এবং তখন থেকেই এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমরা সবসময় চেষ্টা করেছি রোহিঙ্গা সমস্যাকে আসিয়ানের সমস্যা হিসেবে উপস্থাপন করতে। তবে স্বীকার করছি, গত দুই-তিন বছর আমরা কিছুটা নীরব ছিলাম, কারণ আমরা মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দিকে মনোযোগ দিয়েছিলাম।’
এ সময় মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য ওং চেন, ফিলিপাইনের সাবেক কংগ্রেস সদস্য রাউল ম্যানুয়েল এবং এপিএইচআরের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর চনলাথন সুপাইবুনলার্ডসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।