কল্যাণ পার্টি থেকে বাদ ইবরাহিম, ইসিকে চিঠিতে জানাল কমিটি

কল্যাণ পার্টি থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটির তথ্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জানানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে নতুন নেতৃত্ব।
ইসি সচিবের কাছে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, নতুন কমিটিতে দলটির চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দিন পারভেজ ও মহাসচিব মুহাম্মদ আবু হানিফ।
২০০৭ সালে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের গড়া দলটি ২০০৮ সালে হাতঘড়ি প্রতীকে ইসির নিবন্ধন পায়। দীর্ঘদিন বিএনপির সঙ্গে জোট বেঁধে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও ২০২৪ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে কক্সবাজার-১ আসন থেকে নির্বাচিত হন তিনি।
প্রথম দফায় গত ২২ নভেম্বর ইসিকে নতুন কমিটির বিষয়ে জানানো হয়। কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় নতুন করে চিঠি দিয়ে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির বর্তমান দাপ্তরিক ঠিকানা, চেয়ারম্যান হিসেবে মো. শামসুদ্দিন পারভেজ ও মহাসচিব হিসেবে মুহাম্মদ আবু হানিফের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইসি সচিবকে অনুরোধ করেছেন নতুন কমিটির নেতারা।
মুহাম্মদ ইবরাহিমের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ ও নতুন কমিটি গঠনের সব তথ্য জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির (নিবন্ধন নং-০৩১) দাপ্তরিক ঠিকানা পরিবর্তিত হয়েছে। আগে চেয়ারম্যানের কার্যালয় ছিল বাড়ি নং-৩২৫, লেইন নং-২২, নিউ ডিওএইচএস, মহাখালী, ঢাকা-১২১৬ এবং মহানগর কার্যালয়, ৮৫ নয়াপল্টন (৬ষ্ঠ তলা), ঢাকা-১০০০।
এতে বলা হয়, গত ২০২৩ সালের ১০ ডিসেম্বর কেন্দ্রিয় কার্যনির্বাহী কমিটির বিশেষ বর্ধিত সভায় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পদমর্যাদায় ভাইস চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই ঠিকানা পরিবর্তিত হয়ে দাপ্তরিক ঠিকানা- ২৬৬/১, কমিশনার গলি, ফকিরেরপুল, থানা- মতিঝিল, জেলা - ঢাকা করা হয়েছে। একইসঙ্গে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির গঠণতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ২০(ঞ) এর ১-৫ মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীকের পরিবর্তে মো. শামসুদ্দিন পারভেজকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুনের পরিবর্তে মুহাম্মদ আবু হানিফকে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দিন পারভেজ ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মুহাম্মদ আবু হানিফের নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এ খবর প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বিশেষ কাউন্সিলের মাধ্যমে চেয়ারম্যান হিসেবে মো. শামসুদ্দিন পারভেজ ও মহাসচিব হিসেবে মুহাম্মদ আবু হানিফকে কাউন্সিলরদের সম্মতিক্রমে নির্বাচিত করা হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল হিসেবে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির পরিবর্তিত দাপ্তরিক ঠিকানা, চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের পরিবর্তিত নাম নিবন্ধিত হওয়া আবশ্যক। এ বিষয়ে পার্টির গঠনতন্ত্রে কমিশনকে অবগতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, কথিত নতুন কমিটির সদস্যদের বহিষ্কার করা হয়েছিল। তারা এখন নানা ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। এখন আমাকে বহিষ্কার করলে তো নিবন্ধনও বাতিল করতে হবে। সেটা তো তারা করবে না, তারা নিবন্ধনও পাবে না। গেল বছর কল্যাণ পার্টির নির্বাহী কমিটির মিটিংয়ে ১০-১২ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এখন তারা অবৈধভাবে নামটা অপব্যবহার করছে।
নির্বাচন কমিশন কথিত কমিটির কিছু আমলে নেবে না বলে আশা প্রকাশ করেন মুহাম্মদ ইবরাহিম।