দুই মাস বন্ধ চাঁদপুর আধুনিক নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ, যাত্রীদের ভোগান্তি

দুইমাস ধরে বন্ধ চাঁদপুর আধুনিক নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ কাজ। দুই বছর মেয়াদী এই প্রকল্প মেয়াদের দুই বছরের বেশি সময় পার হলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। কাজ চলমান না থাকায় যাত্রীসেবায় নেই কোনো ব্যবস্থা। এতে করে এই রুটে যাতায়াত করা যাত্রীদের পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ।
২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন পায় ‘চাঁদপুর আধুনিক নৌ-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প’। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটির ব্যয় প্রায় ৬৭ কোটি টাকা ধরা হলেও বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫৪ হাজারে। যদিও কাজের মেয়াদ ও আরো অর্থায়ন প্রয়োজন বলছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংক ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের পরামর্শ অনুযায়ী বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করে পাইলিং এর কাজ শুরু করা হয়। তবে পাইলিং কাজ শেষ হলেও অর্থাভাবে নির্দিষ্ট সময়ে হয়ে উঠছে না টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। যার কারণে গত জুন মাস থেকে চাঁদপুর আধুনিক নৌ-বন্দর নির্মাণ কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
ঢাকা-চাঁদপুরসহ বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক লঞ্চ যাতায়াত করে। দেশের অন্যতম নৌরুট হলেও কাজ চলমান থাকায় নেই যাত্রী ছাউনি, বসার ব্যবস্থা ও টয়লেট। যাত্রীসেবায় দ্রুত এই লঞ্চ টার্মিনালের কাজ শেষ করার দাবি জানান যাত্রী ও লঞ্চ মালিকরা।
লঞ্চ যাত্রী মুফতি মো. মাহমুদ ও দুলাল চন্দ্র দাস বলেন, চাঁদপুর লঞ্চঘাট দিয়ে সব সময় যাতায়াত করে থাকি। বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছি লঞ্চঘাটের কাজ চলমান। কবে এই কাজ শেষ হবে আমরা জানি না। নতুন টার্মিনালের জন্য এখানে কিছু হচ্ছে না। বিশেষ করে যাত্রী ছাউনি, বসার স্থান, টয়লেট নেই। সবচেয়ে বড় কথা বৃষ্টি হলে এখানে যাত্রীদের ভিজতে হয়। আমাদের দাবি যতদ্রুত সম্ভব লঞ্চ টার্মিনালের কাজ শেষ করা।
লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশের দ্বিতীয় নদী বন্দর চাঁদপুর কিন্তু সেভাবে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে লঞ্চঘাটের কাজ চলমান রয়েছে। পাইলিংয়ের কাজ শেষ হতে না হতেই এখন আবার পুরোপুরি কাজ বন্ধ। আমরা জানতে পেরেছি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এখানে বরাদ্দকৃত অর্থ না পাওয়ার কারণে কাজ করতে পারছে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত কাজটি শেষ করার।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কর্মী মোশারফ হোসেন জানান, আমি চাঁদপুর আধুনিক নৌ-টার্মিনালের কাজ ও মালামাল দেখাশোনা করি। এখানে একমাসের বেশি সময় ধরে এসেছি, তখন থেকে দেখে আসছি কাজ বন্ধ। কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে আমার জানা নেই।

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর (বন্দর) উপ-পরিচালক বসির আলী খান জানান, আগে যেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে, তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন করে আবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করবে মন্ত্রণালয়। নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এলে আবার হয়তো বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত কাজ শুরু হবে।