অবৈধ সম্পদ অর্জনে পাপিয়া দম্পতির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া দম্পতির সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ( ১৪ আগস্ট) ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু তাহের এই রায় ঘোষণা করেন।
বিচারক রায়ে আসামিদের পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন। এছাড়া জরিমানার টাকা দিতে ব্যর্থ হলে আরও ছয় মাস কারাভোগের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতসূত্রে জানা গেছে, আসামি শামীমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমন জামিনে ছিলেন। বিচারক রায়ের পরে আসামিদের জামিন বাতিল করে সাজা পরোয়ানাসহ কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নথি থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৪ আগস্ট সোয়া ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে ২০২১ সালে ১২ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক শাহীন আরা মমতাজ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১২ অক্টোবর থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট এবং চেয়ারম্যান স্যুটসহ ২৫টি কক্ষে অবস্থান করে খাবার, মদ, স্পা, লন্ড্রি, বারের খরচ বাবদ তিন কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল নগদে পরিশোধ করেন পাপিয়া।
এজাহারে আরও বলা হয়, পাপিয়া ওয়েস্টিন হোটেলে থাকার সময় তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকার কেনাকাটা করেছেন। যার কোনো বৈধ উৎস তিনি তদন্তের সময় দেখাতে পারেননি। এছাড়া, ২০১৫ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে মাসে ৫০ হাজার টাকা করে ৩০ লাখ টাকা বাসা ভাড়া দিয়েছেন। গাড়ির ব্যবসায় এক কোটি টাকা এবং নরসিংদীতে কেএমসি কার ওয়াশ সলিউশনে ২০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছেন। বিভিন্ন ব্যাংকে পাপিয়া ও তার স্বামীর নামে ৩০ লাখ ৫২ হাজার ৯৫৮ টাকা জমা আছে । এসব অর্থের বৈধ কোনো উৎস দুদক অনুসন্ধানে পায়নি বিধায় দুদক মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমানকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পরে ঢাকা ও নরসিংদীতে পাপিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় র্যাব। অভিযানে তাদের বাসা থেকে নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং মফিজুর রহমান সুমনের নামে হোন্ডা সিভিএ ২০১২ মডেলের একটি গাড়ি জব্দ করা হয়। গাড়ির আনুমানিক মূল্য ২২ লাখ টাকা। গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র্যাব। বিমানবন্দর থানায়ও তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন-১৯৭৪ এর অধীনে একটি মামলা করে। এর মধ্যে অর্থ পাচারের মামলায় গত ২৫ মে পাপিয়ার চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। তবে পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীকে এ মামলায় খালাস দেন আদালত।