মায়ের নিথর দেহের পাশে কাঁদছিল চার মাসের শিশু

গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। গতকাল বুধবার (৬ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার বরমী ইউনিয়নের বরমী মধ্যপাড়া এলাকার শাজাহান মৃধার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সুইটি আক্তার নিশি (২০) ময়মনসিংহের পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামের আফসারুল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত ঘাতক স্বামী নুরুল ইসলাম ওরফে নুর ইসলাম (৩৫) বরমী গ্রামের বাসিন্দা।
প্রায় দেড় বছর আগে সুইটির সঙ্গে নুর ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে রয়েছে একটি চার মাসের কন্যা সন্তান। বিয়ের পর থেকেই মাদকাসক্ত নুর ইসলাম নিয়মিতভাবে সুইটিকে শারীরিক নির্যাতন করতেন বলে অভিযোগ পরিবার ও প্রতিবেশীদের।
ঘটনার রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে এবং নুর ইসলামের মা জোবেদাকে আটক করে। তবে ঘটনার পর থেকে ঘাতক নুর ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
নিহতের স্বজনরা জানান, ছোটবেলা থেকেই সুইটি ছিল বাবা-মায়ের অবহেলিত সন্তান। খালা আকলিমার কাছে মানুষ হন তিনি। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় গোপনে খালু নাজমুল সুইটির বিয়ে দেন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী নুর ইসলামের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই শুরু হয় নির্যাতন। প্রায়ই মারধর করতেন নুর ইসলাম। শেষ পর্যন্ত পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান তিনি।
নিহতের মামা জসিম শেখ বলেন, আমার ভাগ্নি খুব অসহায় ছিল। ছোট থেকে খালার কাছে মানুষ হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই নির্যাতনের শিকার হচ্ছিল। বুধবার রাত ১০টার দিকে খালু নাজমুল ফোন করে জানায় সুইটি মারা গেছে। দৌড়ে গিয়ে দেখি ভাগ্নির নিথর দেহ পড়ে আছে। তার দুই পা হাঁটুর নীচ থেকে থেতলানো, পুরো শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন। নুর ইসলাম পিটিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে।
নিহতের খালা আকলিমা বলেন, চার মাসের দুধের শিশুটা সারারাত মায়ের নিথর দেহের পাশে কেঁদেছে। তাকিয়ে ছিল মায়ের মুখের দিকে। এখন সেই শিশু মায়ের জন্য হাহাকার করছে। শিশুটির শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। আমরা এই শিশুটিকে কোথায় নিয়ে যাব? আমাদের কোনো সামর্থ্য নেই তাকে লালনপালন করার।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. জাহাঙ্গীর বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। নিহতের শরীরে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।