মুরাদনগরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আকুবপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দুলালের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, দুলাল একজন বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা ও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম এবং রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ১১টায় উপজেলার পীর কাশিমপুর বাজারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ‘দুলাল মেম্বারের বিচার চাই’, ‘আমরা স্বচ্ছ প্রশাসক চাই’-এমন স্লোগান দিয়ে ক্ষোভ করে তারা।
জানা গেছে, গত ৩ জুলাই আকুবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ি গ্রামে সংঘটিত একটি ট্রিপল মার্ডার মামলার পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ পলাতক রয়েছেন। ওই ঘটনার পর ইউনিয়নের প্যানেল সদস্য মোহাম্মদ দুলালকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে প্রশাসন।
তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ, দুলাল রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত একজন ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ও সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ অনুসারী। তার বিরুদ্ধে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনিক কাজে হস্তক্ষেপের অভিযোগও রয়েছে।
মানববন্ধনে আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘গত ২৪ জুলাই-আগস্টে হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশ অর্জন করেছি, সেই আগস্ট মাসেই মুরাদনগর উপজেলার দুই নম্বর আকুবপুর ইউনিয়নের ফ্যাসিস্টের দোসর, আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের ঘনিষ্ঠ কর্মী দুলাল মেম্বারকে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। কড়ইবাড়ি গ্রামের ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ পলাতক থাকায় জনগণের স্বার্থে একজন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিযুক্ত হওয়া অবশ্যই জরুরি। কিন্তু কোনো ফ্যাসিস্ট ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকে এই পদে আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অনুরোধ করছি— আপনি বর্তমান সদস্যদের মধ্যে থেকে যোগ্য, সৎ ও ফ্যাসিস্টমুক্ত কাউকে দায়িত্ব দিন। অন্যথায় প্রশাসনিকভাবে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে পরিষদের কার্যক্রম পরিচালনা করুন। তবে কোনো রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত ও ফ্যাসিস্ট দোসরকে আমরা এই পদে মেনে নেব না।’
এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন ইকবাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসী অত্যন্ত ভারাক্রান্ত, এত ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত একটি ফ্যাসিস্টমুক্ত দেশে এখনও আওয়ামী দোসররা টিকে আছে কারো না কারো ছত্রছায়ায়। আকুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পলাতক থাকার পর মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) একজন বিতর্কিত আওয়ামী লীগনেতা দুলাল মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেছেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এই দুলাল মেম্বার রাজনৈতিকভাবে বিতর্কিত। তার কর্মকাণ্ডের জন্য ইউএনও নিজেও জনমনে বিতর্কের মুখে পড়তে পারেন। তাই আমরা দ্রুত দুলাল মেম্বারের অপসারণ চাই ও তার স্থলে একজন সৎ, যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’