‘বিদেশে টাকার জন্য ৭ দিন থাকতে পারি না, তারা মাসের পর মাস থাকছে’

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ‘টাকা নিয়ে অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছে। আমরা বিদেশে গেলে সাত দিন থাকতে পারি না টাকার জন্য। তারা মাসের পর মাস বাড়ি বানিয়ে থাকছে কীভাবে? তারা আমাদের ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে গেছে।’
আজ রোববার (৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নাটোর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের চেক হস্তান্তর এবং স্থানীয় ট্রেড ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের দেশের কমপ্লিট স্ট্রাকচার ভেঙে পড়েছে। সমস্ত ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। জেলা থেকে শুরু করে ওপর পর্যন্ত সবকিছু। এটা আট মাস, ১০ মাস, এক বছরে ঠিক করা সম্ভব না। পুলিশ প্রশাসন পুরো ভেঙে পড়েছে। পুলিশ কাজ করছে না। কীভাবে করবেন? স্ট্রাকচার ভেঙে পড়েছে। আইন ও প্রশাসনেরও স্ট্রাকচার শেষ।’
উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা কোনো কিছু হলেই বলে সরকার টাকা দেয় না। কিন্তু সরকার তো ইন্ডাস্ট্রিজ চালায় না। আমরা দিয়েছি লোন, যেমনটি বেক্সিমকোকে দেওয়া হয়েছিল। একটি ব্যাংক থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। সে টাকা কোথায় গিয়েছে আমরা জানি না। টাকা নিয়ে অনেকে বিদেশে পালিয়ে গেছে। আমরা বিদেশে গেলে সাত দিন থাকতে পারি না টাকার জন্য। তারা মাসের পর মাস বাড়ি বানিয়ে থাকছে কীভাবে? তারা আমাদের ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে গেছে। যাকেই ধরি কোনো ব্যাংক থেকে ৫০০, ৭০০, ১০০০ কোটি টাকার নিচে নেয়নি।’
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। আমাদের লেবার অ্যাক্ট যতদূর সম্ভব আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কর্মক্ষেত্রে নারী বৈষম্য বা লিঙ্গ বৈষম্য যাতে না হয়, তার জন্য আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছি। এখন মোটামুটিভাবে আইএলওর যে স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে, তার ওপরে রয়েছি।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘দেশ থেকে শুধু গার্মেন্টস ও জনশক্তি খাতেই রপ্তানি হচ্ছে। এই দুটি খাতকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি রপ্তানিমুখী আরও খাত তৈরি করতে হবে। শিপ বিল্ডিং একটি ভালো খাত হতে পারে। সেটা নিয়ে সরকার কাজ করছে।’
নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার মো. আমজাদ হোসাইন, সিভিল সার্জন ডা. মো. মুক্তাদির আরেফিন সিদ্দিক, অতিরিক্ত জেলা প্রশসাক মো. আবুল হায়াত এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।