গজারিয়ায় গুলিতে ‘স্যুটার মান্নান’ নিহত

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় অবৈধ বালু মহাল পরিচালনা ও নদীতে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হয়েছেন গজারিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত স্যুটার মান্নান (৪৫)। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, লালু-জুয়েল গ্রুপ পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
আজ সোমবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বড় কালীপুরা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মান্নান ইমামপুর ইউনিয়নের জৈষ্ঠিতলা এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে।
এ ঘটনায় আরও ছয়জন আহত হয়েছেন। তারা হলেন- হৃদয় বাঘ (২৮), আতিকুর (৩০), হাসিব (৩৪), শ্যামল (৩০), নয়ন (২৫) ও হামীম (৩২)।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, সকাল ১০টার দিকে মেঘনা নদীর বড় কালীপুরা এলাকায় একদল যুবক সশস্ত্র অবস্থায় একটি স্পিডবোটে নদীতে পাহারা দিচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর স্যুটার মান্নানসহ সাতজন একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলার নিয়ে নদীতে নামলে তাদের ধাওয়া করে আরেকটি ট্রলারে থাকা ১৫-১৬ জনের একটি সশস্ত্র দল। তাদের সবার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, মাথায় হেলমেট এবং গায়ে জ্যাকেট ছিল।
একপর্যায়ে ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়। পরে মান্নানের গুলিবিদ্ধ মরদেহ ট্রলারের ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। আহতরা প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন। হামলাকারীরা দ্রুত চাঁদপুরের দিকে পালিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ বলেন, ‘কে কাকে গুলি করেছে সেটা স্পষ্ট না হলেও অনেকগুলো গুলির শব্দ পেয়েছি। পরে জানতে পারি একজনকে হত্যা করে মরদেহ ট্রলারে ফেলে রেখে গেছে। প্রায় দুই ঘণ্টা কেউ ভয়ে সেখানে যায়নি।’
নিহত মান্নানের স্ত্রী সুমি বেগম বলেন, ‘কিছুদিন আগে মান্নান বলেছিল হোগলাকান্দির লালু-জুয়েল তাকে হত্যা করতে পেশাদার খুনি ভাড়া করেছে। আজ সকালে জানলাম, তারা তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। পিয়াস-নয়ন বাহিনীর লোকজনও এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। আমি থানায় মামলা করব।’
গজারিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম জানান, নিহত মান্নানের বুকে দুটি গুলির চিহ্ন রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে চাইনিজ রাইফেল দিয়ে গুলি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, মান্নান একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী। অস্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী হওয়ায় সবাই তাকে ‘স্যুটার মান্নান’ নামে চিনত। তার বিরুদ্ধে গজারিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।