নওগাঁয় পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে নিত্যপণ্য

পরিবেশ দূষণের উপকরণ পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবণসহ ১৩ ধরনের নিত্যপণ্য দিচ্ছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। পরিবেশ দূষণরোধে নওগাঁর মহাদেবপুরে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাইগাঁ ডিগ্রি কলেজ মাঠে সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
প্রায় ৪০০ পরিবার পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বিনিময়ে এই নিত্যপণ্য পায়। পরিত্যক্ত প্লাস্টিক জমা দিয়ে নিত্যপণ্য পাওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ।
প্লাস্টিক দিয়ে নিত্যপণ্য পাওয়া আদরী রানী বলেন, ‘আমাদের বাড়ির পাশে এসব পণ্য পড়ে থাকত, এতে মশা জন্ম নিত। সেখান থেকে এসব প্লাস্টিক তুলে এনে যে এত সুন্দরভাবে এমন বাজার করার সুযোগ পাব, তা কখনও ভাবিনি।’
বাড়ি থেকে ভ্যান ভর্তি করে প্লাস্টিক নিয়ে এসেছেন সুফিয়া বেগম। তিনি বলেন, ‘আমরা যদি এসব প্লাস্টিক বাইরে বিক্রি করতাম, তাহলে ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি পাইতাম। কিন্তু এখানে এনারা সুযোগ দিচ্ছেন, এ রকম সুযোগ কেউ কখনও দেয়নি। আমরা চাই, তারা মাঝেমধ্যেই এমন আয়োজন করুক।’
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবী মৌসুমি বলেন, প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোরে পুরাতন প্লাস্টিকের বিনিময়ে আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি। আমরা চাই, পরিবেশ সুন্দর হোক। এর পাশাপাশি বর্তমান বাজারে যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সাধারণ মানুষ যাতে আমাদের কাছ থেকে কিছু পণ্য নিয়ে তারা কিছুটা স্বস্তিতে থাকতে পারে।

মৌসুমি আরও বলেন, ডাল, তেল, লবণসহ মোট ১৩টি পণ্য আমরা আজকে দিচ্ছি। তিন কেজি প্লাস্টিক দিলে এক কেজি সয়াবিন তেল পাবে, তিন কেজি প্লাস্টিক এক কেজি চিনি, তিন কেজি প্লাস্টিক দিলে এক কেজি ডাল পাবে, এক কেজি প্লাস্টিক দিলে ছয়টি ডিম পাবে। এ রকম ১৩টি পণ্য রয়েছে। যে যত বেশি প্লাস্টিক আনবে সে তত বেশি পণ্য পাবে।
পরিবেশ রক্ষায় প্রায় সব জেলাতেই ‘প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর’ স্থাপন করার উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। ২০২২ সালে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে, যার নাম ‘প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর’। যেখানে মানুষ তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিক পণ্যের খালি পাত্র, বোতল বা পলিথিন এক্সচেঞ্জ করে নিতে পারে চাল, ডাল, তেল, চিনি, লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। এতে স্থানীয়দের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা যেমন পূরণ হয়, ঠিক তেমনই কমে পরিবেশ দূষণ।